Archive for 2019
এসো হে ঈমানদার মানব মানবী !
By : Maruf Al Berunee
আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
এসো হে ঈমানদার মানব মানবী ! আমরা এবার থেকে পুনঃ আল্লাহর রহমতের সিয়াম সাধনা করি ! আবার কুরআন নাযিল ও পালনের মাহে রমযান আসছে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
* এ বিজ্ঞপ্তি হচ্ছে সে সমস্ত নর-নারীদের উদ্দেশ্যে,যারা আল্লাহর দাসত্বের অঙ্গিকার পালনার্থে ঈমান ধারণ করে, সালাত কায়েম করে, সিয়াম সাধনা করে, যাকাত পরিশোধ করে এবং হজ্জ পালন করে।
যারা লোক দেখানো সাম্প্রদায়ীক পূজা-পার্বণের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি করে, তাদের জন্য এ লেখা ও তার আবেদন নয়। তারা যে যেরুপ ইচ্ছা ধর্মাচার করুক। তাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্কও নেই, বিবাদও নেই।
* আমি আল্লাহর এমন বান্দা যে, একমাত্র আল্লাহকে তাঁর কিতাব ও রাসূলদের অনুকরণে বিশ্বাস করি, জানি ও মানি। অন্য কাউকে মানি না।
* আমার বিশ্বাসের মানদণ্ডের ভাইবোনদের আবেদন করছি যে, পৃথিবীতে আল্লাহর পর তাঁর সবচেয়ে বড়ো দান শাশ্বত দ্বীন ইসলাম। এর স্তম্ভগুলোঃ ঈমান, সালাত ক্বায়েম, সিয়াম সাধনা, যাকাত আদায় ও হজ্জ পালন করলে মানব সমাজ আল্লাহর রহমতে ভূ-পৃষ্ঠ বেহেশতে রুপান্তর হয়। বর্তমানে বিশ্বে উক্ত কাজগুলো ঈমানহীন অনুষ্ঠানরুপে পালনের ফলে মানবজাতি আজ ধ্বংসের কিনারে।
* ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা আল্লাহর নবীদের প্রদর্শিত দ্বীনকে বিকৃত করে মানুষকে জাতে ধর্মে বহুধা বিভক্ত করেছে। তা না হলে মানবজাতি এক পরিবার রয়ে যেতো।
* সকল নবী রাসূলগণ আল্লাহর দ্বীন পালনে হুবহু একই শরীআ ও একই সালাত, সিয়াম ও হজ্জ পালন করেছেন এবং তাদের অনুসারী সবাই তাদের মতো মুসলিম ছিলো। কেউ ইয়াহুদী, খৃষ্টান ও মোহামেডান ছিলোনা।
* তাই আল্লাহ তাঁর শেষ নবী সঃ কে বলেছেন, “তুমি কি ওদের দেখেছো যারা আল্লাহর দ্বীনকে বিকৃত করে তাদের সম্প্রদায়কে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে জাহান্নামের কিনারে দাঁড় করিয়েছে? একটু পরেই তারা তাতে পতিত হবে। কতোই না করুণ তাদের পরিণতি! (ইব্রাহীম-২৮-২৯)
* হযরত মূসা ও ঈসা আঃদের শিখানো তাওহীদী কালেমা, সালাত ও সিয়ামকে ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা আকার প্রকার সব দিক দিয়ে বিকৃত করে ফেলে অভিশপ্ত হয়। তাই আল্লাহ তাঁর আখেরী নবী সঃ এর মাধ্যমে ঈমানদারদের আল ক্বোরআন ও রাসূল আঃ এর মুখে বার বার নির্দেশ করেছেন, তারা যেন কোনো ব্যাপারেই ইয়াহুদী নাসারাদের বিকৃত ধর্মের কে অনুসরণ না করে। করলে তারাও ওদের মতো হয়ে যাবে। আল্লাহ সকল ঈমানদারদের জন্য সর্বকালে একই ভাবে সিয়াম পালন ও সাধনা করতে বলেছেন। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ (বাক্বারা-১৮৩) সালাত মানুষকে সামাজিক শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ দেয়। অশ্লীলতা ও পাপাচার থেকে বিরত রাখে। সিয়াম সাধনা মানুষকে তাক্বওয়ার আগুনে পুড়ে খাঁটি সোনা মুত্তাক্বী বানায়।
* মাহে রমজান সঠিক সিয়াম পালনকারীদের জন্য শুধু বরকত ও বরকতের মাস। আর যারা ইয়াহুদী খৃষ্ঠানদের মতো বিকৃতভাবে পালন করে, তাদের জন্য অপচয় ও পাপাচারের দুর্যোগের মাস।
ঈমানদারের জন্য কম খরচে বেশি ইবাদত করে আগামী এগারো মাসের কৃচ্ছতা সাধনার শিক্ষা দেয় মাহে রমজান। আল্লাহর নির্দেশ ও রাসূল সঃ এর আমল অনুযায়ী রোজা পালন করলে রমজান মাসে খরচ অর্ধেক কমে বাজারের দ্রব্যমূল্য কমে যায়।
* ইয়াহুদী –খৃষ্টানদের মতো রোজা রাখলে অন্যান্য মাসের তুলনায় রোজার মাসে খরচ দ্বিগুণ হয়ে যায়। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়ে। অফিস আদালতে ঘুষ বাড়ে। হাটে বাজারে উলঙ্গ নারীদের মাংস প্রদর্শন হয় এবং ইফতার পার্টি ও ঈদের পোষাকের প্রতিযোগিতায় খৃষ্টমাচের মতো রোজা ও ঈদ এক পার্বণ হয়ে যায়।
* ইসলামের বিধান মতো রোজা রেখে ইফতার করলে হিসাব করে দেখা যায় যে,বাংলাদেশে এক রমযানের সঞ্চয়ে একটি যমুনা ব্রীজ নির্মাণ করা যায়।
* আল্লাহ ক্বোরআনে নির্দেশ করেছেন, “তোমরা রাত্রি থেকে রাত্রি পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করবে” ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ (বাক্বারা-১৮৭)।
* রাসূল সঃ এর মৃত্যুর পর আরবরা ইয়াহুদী-খৃস্টানদের ন্যায় ইসলামী খেলাফতকে ছিনতাই করে মদিনায় রাসূলের সঃ প্রিয় দশ হাজার সাহাবীকে হত্যা করে, রাসূল সঃ এর রওজা ও মসজিদকে ঘোড়ার আস্তাবল বানায়, হাজার হাজার মুসলিম মেয়েদের ধর্ষন করে, এক হাজার কুমারীকে গর্ভবতী করে এবং কাবা ঘরকে পুড়ে ছাই করে ফেলে। তারপর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে সালাত, সিয়াম ও হজ্জকে বিকৃত করে। আজ মুসলিম বিশ্বে সে বিকৃত নামাজ-রোজা চালু। ফলে বিশ্বময় আজ মুসলিম জাতির এ দূর্দশা। ইসলামে সরকার প্রধান জুমা ও ঈদের ইমামতি করে। বারো কোটি মুসলমানের বাংলাদেশের খালেদা হাসিনার ইমামতিতে কি জুমা ও ঈদ পালন করা যায়? মেঘাবতীর পেছনে ইন্দোনেশিয়ায় পড়া যায়? বেনজীরের পেছনে পাকিস্থানে পড়া যায়?
* এভাবে স্বৈরশাসকরা তাদের ভাড়া খাটা মোল্লাদের দ্বারা ধর্মীয় কাঠামোকে তসনস করে দেয়। তাই সালাত ও সিয়াম সব আজ নিস্প্রাণ অন্তসারশূণ্য অনুষ্ঠান।
* এখন বিশ্বময় ডাক এসেছে, ইয়াহুদী-খৃষ্টানদের অনুসরণের ধর্মাচার বাদ দিয়ে রাসূল সঃ এর দ্বীন, সমাজ ও রাষ্ট্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার। রমজান মাসে ক্বোরআন নাযিল হয়েছে। তাই রমজান থেকেই আমরা কালেমা, সালাত ও সিয়াম দুরস্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি।
* আল ক্বোরআনে আল্লাহ বলেছেন সোবহে সাদেকের পূর্বে সেহরী শেষ করে রাত্রি পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করতে। তদ্রূপ আল ক্বোরআনে ফজর ও মাগরিবকে দিবসের দু’প্রান্ত “তারাফাঁইন নাহার”বলা হয়েছে। এশাকে বলা হয়েছে নিশার প্ররম্ভ বা “যুলাফাম মিনাললাইল”। অর্থাৎ ফজর যেমন রাত নয়, মাগরিবও রাত নয়। এশা শুরূ হলে রাত্রের আগমন ঘটে। তখন ইফতারের সময় হয়। মাগরিবের সময় নয়।
* অভিশপ্ত ইয়াহুদী-খৃষ্টানরা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে এক এশা আরেক এশা পর্যন্ত অর্থাৎ চব্বিশ ঘন্টা রোজা চালু করে। আখেরী নবী সঃ বলে যান ওদের অনুসরন না করে এশার ওয়াক্ত হতেই ইফতার করতে।
* আরব সাম্রাজ্যবাদীরা আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশ অমান্য করে ইসলাম ও ইয়াহুদীবাদ উভয় বাদ দিয়ে একটি তৃতীয় শয়তানী চালু করে। অর্থাৎ শেষ রাত্র থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। রাত পর্যন্ত নয়। ইয়াহুদীরা লম্বা করে ফেলে, ওদের চাচাতো ভাই আরবরা রোজাকে খাটো করে মানব জাতিকে মাহে রমজানের বরকত ও রহমত থেকে বিচ্যুত করে।
* ইফতারীর দোকানদাররা এটাকে লুফে নেয়। কারণ ইফতারের নামে মুসলিম বিশ্বে বাজারে অতিভোজ ও ভোগের জাহান্নাম শুরু হয়। দশ টাকার পেঁয়াজ বিশ টাকা হয়,পাঁচ টাকার বেগুন ষোল টাকা এবং এ হারে লুটের বাজার চালু হয়।
আর যদি ক্বোরআন ও রাসূল সঃ এর নির্দেশ অনুযায়ী ইফতার করা হয়, তা হলে ইসলামী সমাজ আসরের সময় থেকে মাগরিব ও মাগরিব থেকে এশা পর্যন্ত ঘরে ঘরে ক্বোরআন তেলাওয়াত ও শিক্ষার বেহেশ্তী সময় পায়। গৃহিণীরা দিবাভাগে রাতের খাবার পাকিয়ে ক্বোরআন শিক্ষায় স্বামী সন্তানদের সাথে শরীক হতে পারে। এশার আযানের পর যখন মানুষ রাতের খাবার খাবে, তখন তার সাথে পেয়াজী, বেগুনী, বুট, ভাজাপোড়া ও অন্যান্য রাক্ষুসে খাওয়া খাবে না। শুধু উপাদেয় সুপাচ্য সুষম খাদ্য খাবে। তাতে গৃহকর্তার অর্ধেক সাশ্রয় হবে। বাড়তি কামাই এর জন্য ঘুষ খেতে হবেনা। গৃহিনীর এতো কিছু পাকাতে গলদঘর্ম হতে হবেনা। এশা পড়ে ঘুমিয়ে আবার মধ্য রাতের পর ঘুম থেকে উঠে তৃপ্তিভরে তাহাজ্জুদ নামাজ ও ক্বোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। এখানে অতি গুরুত্বের সাথে মনে রাখতে হবে যা, ইসলামে “তারাবী” নামের কোন নামাজ নেই। রাসূল সঃ এরূপ কোন সালাতের সংযোজন কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন। (বোখারী-মুসলিম) খলিফা ওমর “বিদ্আত” বলে এটাকে চালু করে এ বলে যে, “যারা শেষ রাতে উঠে রমজানে তাহাজ্জুদ পড়বেনা, তারা রাত্রের প্রথমার্ধে হাট বাজারে আড্ডা না দিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে ক্বোরআন শুনুক। তবে এটি একটি বিদ্আত”। রাসূল সঃ যা করেন নি, ধর্মে তা করাই বিদ্আত। বিদ্আত দাঁড় করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু রমজান মাসে মস্জিদ কমিটি চাঁদা তোলা ও হাফেজ ভাড়া করে অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা করতে এ বিদ্আতকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, তার চাপে মাহে রমজানে ক্বোরআন বুঝার ফরজই চাপা পড়ে হারিয়ে গেছে। তারাবীর তারাহুড়ায় হাফেজ, ইমাম ও মুসল্লী সবাই ক্বোরআন শুনে বুঝে, ক্বোরআনের গভীরে পৌঁছার সুযোগ চীরতরে হারিয়েছে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাই হি রাজিউন।
আল ক্বোরআনে আল্লাহ যেভাবে ফজর ও মাগরিবকে দিবসের দু’আঁচল বলেছেন, রাত নয়, তদরূপ রাসূল সঃ বলেছেন মাগরিব হলো দিবসের বিতির, যেমন এশার পর রাতের বিতির হয়। তাহাবীতে আব্দুল্লাহ ইবন উমর এ হাদীস বর্ণনা করেছে, বিতিরের অধ্যায়ে। এ বর্ণনা যেহেতু ক্বোরআনের সাথে মিল, তাই তা গ্রহণীয়।
যারা মুসলিম উম্মার চরম দুর্দিনে সত্য ও নাজাতের পথ চায়, তাদের সঠিক বুঝের জন্য সিয়াম ও ইফতারের সঠিক সময় ক্বোরআন ও রাসূল সঃ এর শিক্ষা অনুযায়ী দেওয়া হলো। সহজভাবে বুঝার জন্য দিনরাত, দিনের আচল ও রাতের প্রারম্ভ সূচক অত্যন্ত সূক্ষ্ণ নির্দেশক চিত্র তুলে ধরা হলো। যারা বুঝা ও আমলের জন্য আরও জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য আরও জিজ্ঞাসার সুযোগ রয়েছে। তাদের জন্য সঠিক সিয়াম সাধনা, বর্জনীয় ও করণীয় নির্দেশক আরও একটি পোস্টারও ছাপা হয়েছে। আর যারা বিবাদ ও ফিতনা সৃষ্টিতে আগ্রহী, তাদের সাথে বিতর্ক করার সময় ও সুযোগ নেই। তারা রোজ তিনবার ইফতার খেয়ে এক দিনে তিনটি করে রোজা রাখলেও তাতে আমার আপত্তি নেই, তারা যা খুশি করুক। আমি তাদের কেউ নই, তারাও আমার কেউ নয়। তারা গণধর্ম, গণতন্ত্র, গণরোজা, গণইফতার ও গণঈদ যত পারে, তাতে মেতে থাকুক। তাদের আনন্দ উৎসবে আমার ঈর্ষা নেই। কেয়ামতের দিন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের সামনে ফয়সালা হবে। রাসূল সঃ বলেছেন, “তোমরা ঠিক সময়ে ইফতার করবে, ইয়াহুদীদের মত দেরী করবে না”। তাঁর এ আদেশ অবশ্যই ইয়াহুদীদের ২৪ ঘণ্টার উপবাসের বিরুদ্ধে। তদ্রূপ, তা বর্তমানে রমজানের প্রহসনকারী নামধারী মুসলমানদের বিরুদ্ধেও, যারা ইয়াহুদীদের পদাঙ্ক অনুসরণে সিয়ামকে খাটো না করে রাত না হতেই দিনের প্রান্তভাগে সন্ধ্যায় ইফতার করে। ইয়াহুদী খৃষ্টানদের ন্যায় এদেরও সিয়াম হয় না।
এসো হে আল ক্বোরআনের অনুসারী নবী রাসূলদের সিয়াম পালনকারী আল্লাহর দাস দাসীরা! সঠিক সালাত ও সিয়াম পালন করে বিশ্বে পুনঃ মুস্লিম উম্মার পুনর্জাগরণের কাফেলায় শরীক হও।
ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ
অতঃপর তোমরা রাত্র পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। (বাকারা-১৮৭)
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِّنَ اللَّيْلِ
সালাত কায়েম কর দিবসের দু’আচলে এবং রাতের প্রারম্ভেও। (হুদ-১১৪)
দিবসের দু’ প্রান্তিক আঁচল হলো ফজর ও মাগরিব। রাতের শুরু হয় এশার ওয়াক্ত শুরু হলে। তাকে কুরআনে “যুলাফাম মিনাল লাইল” বলা হয়েছে। মাগরিব দিবসের দ্বিতীয় প্রান্ত, রাত্র নয়। ফজর ও মাগরিবকে আল্লাহ কুরআনে “তারাফাইন নাহার” বলে উল্লেখ করেছেন।
মাওলানা রূমি নিয়ে অতীতের কিছু লিখা।
By : Maruf Al Berunee
ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে।
১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন)
২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন)
৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য)
৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা)
৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি)
আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো –
"অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।"
---------
একজন জ্ঞানী ব্যক্তি যা যা চিন্তা করে, সব কথা মুখে বলে দেয় না। বরং মুখে যত কথা বলে, সব কথা নিয়ে চিন্তা করে। - মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি।
---------
রূমি বলেন -
ক্ষুধা পেটে ধৈর্য ধরার নাম "রোজা",
দুঃখে সময় ধৈর্য ধরার নাম "দৃঢ়তা",
মানুষের আচরণে ধৈর্য ধরার নাম "সহিষ্ণুতা",
খুব ইচ্ছা হলে ধৈর্য ধরার নাম "দোয়া",
আবেগে ধৈর্য ধরার নাম "অশ্রুজল",
মনে পড়লে ধৈর্য ধরার নাম "একাকীত্ব",
এবং,
প্রিয় মানুষের জন্যে ধৈর্যের নাম "ভালোবাসা"
[২]
অন্যের জন্যে ধৈর্য ধারণ করার নাম ভালোবাসা।
নিজের জন্যে ধৈর্য ধারণ করার নাম আশা।
এবং
আল্লাহর জন্যে ধৈর্য ধারণ করার নাম বিশ্বাস।
----------
ভালোবাসার জ্ঞান নিয়ে আলাপ করতেন রুমি। তাঁর আগে সক্রেটিস আলাপ করতেন জ্ঞানের ভালোবাসা নিয়ে। শুরুটা না হয় হোক 'জ্ঞানের ভালোবাসা' দিয়ে, কিন্তু শেষ তো হবে 'ভালোবাসার জ্ঞান' দিয়ে। শুরুটা না হয় হোক 'إقرا' দিয়ে, কিন্তু শেষে তো চাই তাঁর ভালোবাসা। আর বিশ্বাস (ايمان) -ই তো হলো ভালোবাসার মূলমন্ত্র।
--------
বিচারপতিদের এক বৈঠকে এরদোয়ান বলেন – "আদালত হলো রাষ্ট্রের ছাদ। আদালতের কাজ সম্পর্কে পৃথিবীতে অনেকে দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ কথা বলেছেন। তবে সবচেয়ে মূল্যবান কথা বলেছেন মাওলানা জালাল উদ্দিন রূমি"।
মাওলানা জালাল উদ্দিন রূমি বলেছেন – “জুতাকে পায়ের নিচে রাখা, আর টুপিকে মাথার উপর রাখা-ই আদালতের কাজ। যখন টুপিকে পায়ের নিচে রাখা হয়, এবং জুতাকে মাথার উপর রাখা হয়, তখন আদালত ভেঙ্গে পড়ে। তিনি আরো বলেন, নায় বিচার হলো গাছে পানি দেয়া, আর, জুলুম হলো আগাছায় পানি দেয়া।”
এরদোয়ান বলেন – "আদালতের কাজ হলো, যে যা প্রাপ্য, তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয়া। আর, জুলুম হলো, যে যা প্রাপ্য, তাকে সেটা না দেওয়া। দেশে যখন আদালত প্রতিষ্ঠা থাকে, তখন দেশে শান্তি থাকে। কিন্তু যখন আদালত ভেঙ্গে পড়ে, তখন দেশে অশান্তি শুরু হয়"।
--------
মৃত মাটির থেকে আমি বৃক্ষে উদ্ভাসিত,
উদ্ভিদ হয়ে মরি আমি পশুতে বিকশিত।
পশু হয়ে মরি আমি, মানুষ হয়ে প্রকাশিত,
মানুষ হয়ে মরতে কি ভয়? যদি হই উন্নীত।
- মাওলানা জাল্লালুদ্দিন রুমি।
از جمادی مردم و نامی شدم ** وز نما مردم به حیوان برزدم
مردم از حیوانی و آدم شدم ** پس چه ترسم کی ز مردن کم شدم
I died to the inorganic state and became endowed with growth, and (then) I died to (vegetable) growth and attained to the animal. I died from animality and became Adam (man): why, then, should I fear? When have I become less by dying?
----------
১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কারো মৃত্যুবার্ষিকী এবং কারো জন্মবার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকী-ওয়ালারা জন্মবার্ষিকী-ওয়ালাদেরকে সহ্য করতে পারে না, আবার, জন্মবার্ষিকী-ওয়লারা মৃত্যুবার্ষিকী-ওয়ালাদের সহ্য করতে পারে না। ফলে, এ নিয়ে অনেক তর্কাতর্কি হয়, কখনো কখনো মারামারি এবং রক্তারক্তিও হয়।
এ সমস্যার সমাধান দিয়েছেন আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমি। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীকে বলা হয় "শব্বে আরুজ" বা জন্মের রাত্রি বা জন্মবার্ষিকী। কারণ, জালাল উদ্দিন রূমি মনে করতেন, মৃত্যু জীবনের শেষ নয়, বরং মৃত্যুর মাধ্যমে অন্য একটি জীবনের সূচনা ঘটে। তাই রূমির অনুসারীগণ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীকে জন্মবার্ষিকী হিসাবে পালন করেন।
আল্লামা রূমির মতো আমরাও চাইলে কারো কারো মৃত্যুবার্ষিকীকে জন্মবার্ষিকী হিসাবে পালন করতে পারি।
হোমিওপ্যাথিক রোগী লিপি
By : Maruf Al Berunee
রোগী লিপি:
সিরিয়াল নং : নাম –
বয়স – পেশা –
তারিখ
১। রোগের বিবরণ –
২। রোগের অবস্থা বেশী
খারাপ হয়-
বর্ষাকালে /গ্রীষ্মকালে /শীতকালে/মধ্যরাতের পরে/সন্ধ্যায়/বিকেলে/দুপুরে/সকালে/বিশ্রামের
সময়/নড়াচড়া করলে/রাতের বেলা/দিনের বেলা/আগুনের কাছে গেলে/ভোর ৩ টা থেকে ৫ টার সময়/বিকেল
৪টা থেকে ৮টার সময়/অন্ধকারে/আলোতে/চাপ দিলে/গরম ঘরে/ম্যাসেজ করলে/ঘুমাইলে/ভিজলে/ঘামলে/কথা
বললে/টেনশন করলে/উত্তেজিত হলে/মানসিক শ্রমে/পরিশ্রম করলে/দাঁড়াইলে/হাঁটলে/রোগের কথা
চিন্তা করলে/নীচে নামার সময়/ভরাপেটে/খালিপেটে/বিছানায় শুইলে/বদ্ধ ঘরে/ঠান্ডা খাবারে/ঠান্ডা
বাতাসে/ভেজা বাতাসে/শুকনো বাতাসে/খোলা বাতাসে গেলে ইত্যাদি।
৩। রোগ হওয়ার আনুমানিক কারণ ?
মাত্রাতিরিক্ত আর্থিক ক্ষতি/পচাঁ/বাসি খাবার খাওয়ায়/রাগ চেপে রাখা/আঘাত পাওয়া/ভয়
পাওয়া/মানসিক আঘাত/কোন ধরনের নিঃস্রাব (ঘাম/সর্দি/মাসিক) হঠাৎ বন্ধ হওয়ায়/পারদের বিষক্রিয়া/ঠান্ডা
বাতাস/প্রেমে ব্যর্থতা/আপনজনের মৃত্যু/কারখানায় কাজ করা/প্রচণ্ড গরমের সময় ঠান্ডা খাবার
খাওয়া/যৌনকর্ম/রক্তক্ষরণ/বেশী পরিশ্রম/বেশী পড়াশুনা/ঠান্ডা পানিতে গোসল করা/গর্ভধারন/বিষন্নতা/ভারী
কিছু উঠানো/ঠান্ডা পানিতে পা ভিজানো/টিকা / ভ্যাকসিন নেওয়া/মাথায় আঘাত ইত্যাদি।
৪। অতীতে কোন কোন রোগ হয়েছিল ?
টিকা নিয়েছি (বিসিজি, ডিপিটি, হাম, পোলিও, এটিএস, হেপাটাইটিস).অপারেশন / গর্ভপাত /চর্মরোগ /কোষ্টকাঠিন্য / গলগন্ড/কোমরে বাত /ক্যান্সার
/ গনোরিয়া /সিফিলিস /টিবি/যক্ষ্ম।
৫। তাপমাত্রা সম্পর্কিত অনুভূতি ?
বরফের মতো ঠান্ডা পানি খাই,ঠান্ডা বাতাস খুবই
পছন্দ ,গরমকাল সহ্য করতে পারি না ,শীতকাল সহ্য করতে পারি না।
৬। শারীরিক আকৃতি কেমন ?
প্রচুর খেয়েও শুকিয়ে যাচিছ,শরীরে পানির পরিমাণ
বেশী ,বয়সের চাইতেও বেশী বয়ষ্ক মনে হয়,মোটা,স্বাভাবিক পাতলা।
৭। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস কেমন ?
বেশী বেশী হাত ধোয়ার অভ্যাস/অভ্যাস নাই,কোন কিছু এলোমেলো দেখলে ভীষণ রাগ লাগে/রাগ লাগে না ,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস /
সিরিয়াস না,শীতকালে নিয়মিত গোসল করি/করি না, গরম এ নিয়মিত গোসল করি / নিয়মিত গোসল করি না ।
৮। যে-সব খাবার/ পানীয় খুব বেশী পছন্দ ?
বরফের মতো ঠান্ডা পানি খেতে ভালো লাগে,দুধ হজম হয় না ,গরম পানি , গরম ভাত, গরম খাবার পছন্দ ,ঠান্ডা পানি , ঠান্ডা বাতাস , ঠাণ্ডা ভাত, ঠান্ডা সব খাবার পছন্দ , এতো গরম চা/ কফি খাই
যা অন্য কেউ খেলে মুখ পুড়ে যাবে , লবন বেশী খাওয়ার অভ্যাস
,মিষ্টি খাবারের প্রতি ভীষণ লোভ / ঝাল খাবারের প্রতি
ভীষণ লোভ ,ঠান্ডা খাবার , তেল-ঘি জাত, গোল আলু ,
কাবাব , চকলেট, আপেল , আইসক্রিম , মাংস , মাছ , ডিম , দুধ , ঝাল , টক
৯. ক্ষুধার অবস্থা কেমন ?
পানি খাওয়ার কিছু পরেই বমি হয়ে যায়, হজমশক্তি দুর্বল , যা খাই সব ঠেলে উপরের
দিকে উঠতে থাকে ,
খাওয়ার পর পেট ভার ভার লাগে
, পিপাসা কম , পিপাসা বেশী ,
খোলা বাতাস খুবই পছন্দ , চক, কয়লা, পোড়ামাটি, চুনা প্রভৃতি অখাদ্য খাওয়ার ইচ্ছা , প্রচুর খেয়েও ক্ষুধা মিটে না , পানি ছাড়া সবই তিতা লাগে , খাওয়ার একটু পরেই
আবর ক্ষুধা লাগে ,
যা খাই তাতেই পেটে গ্যাস হয়
, অল্পকিছু খেলেই পেট ভরে যায় , মুখ তিতা তিতা লাগে , সব খাবারই নোন্তা লাগে , ক্ষুধা আছে কিন্তু খেতে ইচেছ করে না , সবচেয়ে বেশী ক্ষুধা পায় সকাল ১১ টার পর বেশি , রাতে কম
ইত্যাদি।
১০। ঘুমের অবস্থা কেমন ?
হাঁটুর মুরে ঘুমাই, ঘুমের মধ্যে পায়ে স্পর্শ করলে লাফ দিয়ে উঠি, ঘুমের সময় মুখ থেকে লালা ঝরে , ঘুমের মধ্যে অল্পতেই চমকে উঠি , অনেক ঘুমিয়েও ফ্রেস লাগে না , ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যায়/ভাঙ্গে না , ঘুম বেশী , ঘুম স্বাভাবিক , ঘুম কম ইত্যাদি।
১১। কিসে কিসে ভয় পান ?
ধারালো অস্ত্র, উপর থেকে পড়ে যাওয়ার
ভয় , ভয় পেলে পেটের ভেতর চন্ করে ওঠে , চিপা সংকীর্ণ জায়গা , চাকরি হারানো , গরীব হওয়া , বদ্ধ ঘর ,
ট্রেন , কলেরা , প্যারালাইসিস ,ক্যান্সার, নীচের দিকে নামতে, আলপিন , ধারালো অস্ত্র, বজ্রপাত , চোর-ডাকাত, মৃত্যু , ভুত-পেত্নী , কুকুর , সাপ , তেলাপোকা ,টিকটিকি ,
উপরে ওঠে নীচে তাকাতে, অন্ধকার , লোক সমাগম ,একা থাকতে ইত্যাদি।
১২। আপনার স্মরণশক্তি কেমন ?
ছোটখাট ব্যাপারে বেশী দুঃশ্চিনতা হয়, চিন্তা ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারি না , কথা বলার সময় লাইন হারিয়ে ফেলি , কোনো কিছুতে সহজে মনোনিবেশ করতে পারি না , চিন্তা করার শক্তি নাই , হঠাৎ করে স্মরণশক্তি
অনেক কমে গেছে ,
প্রখর ,স্বাভাবিক , দুর্বল ইত্যাদি।
১৩। মেজাজ-মর্জি কেমন ?
রাগলেও তা প্রকাশ করি না, আমার মতের বিরোধীতা
সহ্য করতে পারি না , অল্পতেই ভীষন রেগে
যাই , খিটখিটে , স্বাভাবিক ,
একেবারে ঠান্ডা, টেনশন করলে ডায়রিয়া হয়ে যায়, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ না করে থাকতে পারি না ,মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখলে সহ্য করতে পারি না , অল্পতেই মনে কষ্ট পাই , মেজাজ-মর্জি ক্ষণে ক্ষণে পাল্টায় ইত্যাদি।
১৪। ঘামের অবস্থা কেমন ?
চামড়া তৈলাক্ত, হাত-পা সর্বদা ঘামে
ভিজে থাকে , শরীরের খোলা অংশ ঘামায় , মাথার ঘামে বালিশ ভিজে যায় ,পায়ে দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম , শয়ন করলে বেশী ঘামায় , শরীরের এক পাশে ঘামায় ,শরীরের উপরের অংশে বেশী ঘামায় , ঘামের গন্ধ টক , সামান্য পরিশ্রমেই প্রচুর ঘামায় , ঘুমের মধ্যে / এমনকি চোখ বন্ধ করলেও , মাথা এবং ঘাড়ে বেশী ঘামায় , ঘাম খুব বেশী ,স্বাভাবিক,ঘাম খুব কম ইত্যাদি।
১৫। কি ধরণের স্বপ্ন দেখেন ?
বিরক্তিকর, ডাকাত , দুর্ভাগ্যজনক , পানি , আগুন ,উপর থেকে পতন ,মৃত মানুষ ,ভয়ঙ্কর ,মাঠে ঘুরতেছি ,ঝগড়া ,গোলাগুলি ,কঠোর পরিশ্রম ,অস্থিরতাপূর্ণ ,নোংরা ,প্রাণবন্ত দুঃস্বপ্ন ,এলোমেলো ,স্বাভাবিক ,দেখি না ইত্যাদি।
১৬। ভীষণ দুর্গন্ধ আছে কি ?
ঘামের গন্ধ মিষ্টি ধরণের ,পায়খানা এবং ঘামের
গন্ধ টক ,পায়খানা/ প্রস্রাব/ বমিতে মাছের গন্ধ ,নিঃশ্বাস ও কফের দূর্গন্ধ নিজের কাছেও অসহ্য ,ঋতুস্রাবে ,ঘামে রসুনের গন্ধ ,নিঃশ্বাসে ,প্রস্রাবে ,পায়খানায় ইত্যাদি।
১৭। মাসিকের অবস্থা কেমন ?
মাসিকের পরিবর্তে স্তনে দুধ আসে ,মাসিক শুরু হলে অনেক সমস্যা চলে যায় ,মাসিক নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই শুরু হয়ে যায় ,মাসিকের পূর্বে বিষন্নতা ,স-ন্যদান কালে জরায়ু থেকে রক্তক্ষরণ হয় ,প্রথম মাসিক দেরীতে শুরু হয়েছিল ,মাসিকের কয়েকদিন পূর্ব থেকে মাথাব্যথা শুরু হয় ,মাসিকের শুরুতে ডায়েরিয়া দেখা দেয় ,দুর্গন্ধযুক্ত ,ব্যথাযুক্ত ঋতুস্রাব ,সাদাস্রাব ,বেশী স্রাব ,অল্প স্রাব ,একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে ,অনিয়মিত ,নিয়মিত ইত্যাদি।
১৮। ব্যথা-বেদনার হালচাল কেমন ?
ব্যথা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে ,ছুরি মারার মতো ,বিজলীর মতো ,সামান্য ব্যথাতেই অজ্ঞান হয়ে যাই ,শক্ত বিছানায় শুতে পারি না ,সামান্য স্পর্শেও
ব্যথা পাই ,ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়ে এবং ধীরে ধীরে কমে ,ব্যথা অতি অল্প একটু জায়গায় ,আঙ্গুলের মাথায় সুই ফোটানোর মতো ব্যথা ,ব্যথা তলপেট থেকে স্তনের দিকে যায় ,ডান কাঁধের নীচে ঝিমমারা ব্যথা ,ব্যথা কোমর থেকে হাটুর দিকে যায় ,ব্যথা হঠাৎ আসে হঠাৎ যায় ,ব্যথা হওয়ার কথা অথচ ব্যথা নেই ইত্যাদি।
১৯। পায়খানা-প্রস্রাবের বৃত্তান্ত ?
প্রস্রাবের গন্ধ গরুর চেনার মতো ,হাঁচি, কাশি বা হাঁটার সময় প্রস্রাব বেরিয়ে যায় ,প্রস্রাবের গন্ধ কড়া/ঝাঁঝালো ,ছাগলের লেদির মতো পায়খানা ,পায়খানায়/ প্রস্রাবে ভীষণ জ্বালা-পোড়া আছে ,ঘনঘন প্রস্রাব হয় ,কোষ্টকাঠিন্য/ পায়খানা শক্ত (দীর্ঘদিন যাবত) ইত্যাদি।
২০। শরীরে জ্বালা-পোড়া আছে কি ?
পেটের ভেতরে ,পায়ের তালুতে ,হাতের তালুতে ,মাথার তালুতে।
২১। হার্টের/ হৃৎপিন্ডের অবস্থা কেমন ?
মাঝে মধ্যে হার্টবিট মিস হয়,হার্টবিট খুবই কম/ধীরে
ধীরে ,বুক ধড়ফড়ানি ,হার্টবিট খুবই দ্রুত ,হার্টের ব্যাপারে সব সময় দুঃশ্চিন্তায় থাকি,অল্পতেই অজ্ঞান হয়ে যাই
ইত্যাদি।
২২। মানসিক লক্ষণসমূহ কেমন ?
মানুষের সাথে ,মিশুক/ সামাজিক ,কথায় কথায় ঝগড়া করার স্বভাব ,মানুষকে সন্দেহ করার অভ্যাস ,উদাসীন/ বেখেয়ালী ,কথা বলতে ইচ্ছে করে না ,বেশী বেশী কথা বলার স্বভাব ,ভবিষ্যতের ব্যাপারে হতাশা ,অনুশোচনা/অনুতাপ দগ্ধ হইতেছি ,আবেগপ্রবণ ,বিষন্নতা - মনে আনন্দ নাই ,এক পজিশনে বেশীক্ষণ
থাকতে পারি না ,ভীষণ অস্থির ,অলস ,অত্যধিক চঞ্চল ,সহজে মিশতে পারি না ,রোমান্টিক (রসিক) ধরনের মানুষ ,হিংসুটে ,বিখ্যাত হওয়ার ইচ্ছা ,নেতৃত্বের জন্য পাগল
,শান্তিপ্রিয়-ঝগড়া-বিবাদ পছন্দ করি না ,প্রতিশোধ পরায়ণ ,টাকা উড়ানোর স্বভাব ,খরচের ব্যাপারে সাংঘাতিক হিসাবী ,এক মুহূর্ত কাজ না করে থাকতে পারি না ,সমাজের / পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা নেই ,বাড়ির জন্য সর্বদা মন কান্দে ,মনে হয় আমার সাংঘাতিক কোন রোগ হয়েছে ,নিজেকে বড় এবং অন্যদের তুচ্ছ মনে হয় ,বড় রকমের কষ্ট পেয়েছিলাম , ধর্মীয় ,পার্টি, অনুষ্টান,
সভা-সমিতি ইত্যাদি নিয়ে পড়ে
থাকতে ভালো লাগে ,অত্যধিক মানসিক পরিশ্রম করি ,অল্পতেই ভয় পেয়ে যাই ,নিজের বা অন্যের কৃতকর্মের পরিণতি নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তা
হয় ,গান খুবই পছন্দ করি ,চাকরি বা পেশার চিন্তা,উচ্চ আওয়াজ ভীষণ অসহ্য লাগে ,প্রশ্নের উত্তর দিতে দেরি হয়ে যায় ,মনে হয় আর বাঁচব না,মনের মধ্যে অদ্ভূত-হাস্যকর সব চিন্তা আসে ,মনে হয় আমার আখেরাত বরবাদ হয়ে গেছে ,দ্রুত হাঁটার অভ্যাস ,সহজে মত পাল্টে যায় ,সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হয় ,সবকাজেই তাড়াহুড়া করি ,কথায় কথায় কেঁদে ফেলি ,সান্ত্বনা দিলে উল্টো ক্ষেপে যাই ,সবকিছুতে গোপনীয়তার স্বভাব , পরকালের মুক্তি নিয়ে বেশী চিন্তা করি ভয় পেলে হাত-পায়ে
ক্বাঁপুনি দেখা দেয় ,অন্যের ক্ষতি করার
ইচ্ছা হয় , আত্মহত্যা করতে ইচছা হয় মাথায় গুলি করে/ উপর থেকে
লাফ দিয়ে , অল্পতেই হাসি অল্পতেই কাঁদি , ঘনঘন পেশা পরিবর্তনের অভ্যাস ,জীবন এর প্রতি আগ্রহ কমে গেছে , মনে হয় সবাই আমাকে ঘৃণা করে ,চাঁদের আলোতে আবেগপ্রবন হয়ে পড়ি ,মনে হয় সবাই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতেছে ,মানুষ খুন করার ইচ্ছা হয় ,একা থাকতে ইচ্ছা করে ,অল্পতেই মনে কষ্ট পাই ,মনের মধ্যে অনেক রাগ জমে আছে , কাজের প্রশংসা শুনতে খুবই পছন্দ করি ,মনে হয় আমার রোগ কখনও ভালো হবে না ,মনে হয় পাগল হয়ে যাব ,সব ব্যাপারে কাওকে পরোয়া করি না ,ভবিষ্যতের অজানা অমঙ্গলের ভয় হয় ,বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি অনাসক্তি ,স্ত্রী-পুত্র-স্বামী-সন্তানের প্রতি দরদ কমে গেছে
,কোনো মানুষকেই সহ্য হয় না ,কোন ব্যাপারেই আগ্রহ নাই ,প্রশংসা শোনলে কান্না পায় ,নাচে, লাফায়, হাসে, শীস বাজায় ,অশ্লীল গান গাই , বিষ খাওয়ায়ে মেরে ফেলবে আশঙ্কা, কারো কোন অসুখ হয়েছে শুনলে মনে হয় আমার নিজেরই হয়েছে
, একা থাকলে মনে হয় ঘরের কোণায় চোর-ডাকাত লুকিয়ে আছে
ইত্যাদি।
২৩।কি কি অদ্ভূত লক্ষণ আছে ?
আলপিন নিয়ে ব্যস্ত অথবা ভয়ে- থাকি,গতকালের ঘটনাকে মনে হয় অনেক দিন আগের ঘটনা নিজেকে
গর্ভবতী, শিশুদের পছন্দ হয় না ,আমার ভেতরে দুইটি ইচ্ছা কাজ করে,একটি আদেশ করে অন্যটি নিষেধ করে , কে যেন আমাকে নির্দেশ দিচ্ছে এবং আমি তার কথা মতো
চলতে বাধ্য হচ্ছি,মনে হয় আমার সাথে অন্য একজন (শিশু) শুয়ে আছে,অট্টহাসি-চীৎকার-হৈহুল্লোর করতে ইচ্ছে হয়, বুকে-পেটে জীবন্ত কিছু একটা নড়াচড়া করতেছে,মনে হয় পেটের ভেতরে বুদবুদ উঠতেছে ,শরীরটা মনে হয় টুকরা টুকরা হয়ে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে আছে, মুখের ওপর মাকড়সার জালের মতো লাগে , মল-মূত্র-গোবর খাওয়ার স্বভাব,আমার চারদিকে সাপ দেখি , চামড়ার নীচে মনে হয় বালু আছে/পোকা হাঁটিতেছে,চেনা জায়গা হঠাৎ অচেনা লাগে , একবাক্য বারবার বলি,নিজেকে কোন ফেরেশতা বা জ্বিনের শির্ষ মনে হয়,সারাক্ষণ বকবক করি ইত্যাদি।
রোগীর অভিভাবকের মন্তব্য ঃ