Popular Post

Posted by : Maruf Al Berunee Wednesday, June 20, 2018

চাঁদ পেরিয়ে সূর্য আসে, সূর্য নিভে গেলে চাঁদ। গোধুলির ঘরে না আসে সূর্যের তীব্র রশ্মি, না আসে চাঁদের মায়াবী আলো। ঘর, না গোধুলি যেখানে থাকে সেটাকে ঠিক ঘর বলা যায় না। ঘরের সাথে পরিবার থাকে, ভালোবাসা থাকে, মায়া থাকে, অভিমান থাকে, অভিযোগ থাকে, সম্পর্ক থাকে। এইসব কিছু থেকে অনেক আগেই ছিড়ে যাওয়া গ্যাস বেলুনের মত উড়ে চলে গ্যাছে সে অনেক দূরে। তাই ঘর না বলে একটা দালানঘর বলা যেতে পারে। যেখানে অক্সিজেন আসতে পারে, কিন্তু আলো আসতে পারে না।
গোধুলির নামটা গোধুলি না হয়ে বিকেল হলে ভাল হত। বিষন্ন বিকেল। পৃথিবী ভাবে, বিষন্নতা গোধুলির সহজাত স্বভাব। আসলে তা নয়। গোধুলি হাসতে ভালোবাসত, গাইতে ভালোবাসত, নাচতে ভালোবাসত। জোয়ার ভাটায় ভাসতে তার কখনই ভালো লাগত না। মানুষ কখনও একা বাঁচতে পারে না। একথা সবার জন্য প্রযোজ্য হলেও গোধুলির জন্য একথা ভাবাও পাপ। যেদিন সে আর একা থাকতে চাইল না, চিৎকার করে বলতে চাইল- 'আমি একটা ঘর চাই, দালানের অক্সিজেন নিয়ে আর বেঁচে থাকা যাচ্ছে না'। সেদিন পৃথিবী তাকে ছেড়ে চলে গেল। গোধুলিকে সবাই ছেড়ে চলে যায়, কেন তাতা বলে যায় না। গোধুলি ভোলার ভান করে। মঞ্চে যতটা ভাল অভিনয় সে করে, বাস্তবে তার চেয়ে আরও অনেক ভাল করে। যেন সব ভুলে গ্যাছে সে। যেন কোনকিছুতেই কিছু এসে যায় না। কিন্তু ঝিনুকের মতই বিষের বালি তিতা করে দেয় গোধুলির অন্তর। নিজের সব শখ, আহ্লাদ বুকের কোণায় মাটিচাপা দিয়ে গোধুলি হাসে। হাসতে তার ভীষণ কষ্ট হয়। যে বুকে একসময় এক সিন্ধু ভালোবাসা ছিল, এখন সে বুক সমাধিসৌধ। সেখানে শকুনেরা হা হা করে উড়ে বেড়ায়।
মাঝে মাঝে গোধুলির জীবনে অতীত গল্প হয়ে ফিরে আসে। সেসব গল্পে গোধুলি ছেলেবেলার গন্ধ পায়। সে গন্ধ এখন অসহ্য লাগে তার। জীবন থেকে পালাতে চেয়ে কোন মোড়ে যেন হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে। এমনই এক মোড়ে দেখা হয়েছিল প্রযুক্তির সাথে। প্রযুক্তির বুকে সে ভালোবাসার গন্ধ পেত। সে গন্ধও এখন অতীত, স্মৃতিমাত্র। এখন গোধুলি আর কোন গন্ধ পায় না। শুধু ওপারের গন্ধ পায়। আর কারও অপেক্ষা সে করে না। এখন শুধু ওপারে যাবার অপেক্ষা....

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

Copyright © Technology Is For Us, We Are Not For Technology!!! - - Designed by Maruf Al Berunee -