কুমন্ত্রনাদাতার কুমন্ত্রনা থেকে প্রতিপালকের আশ্রয় চেয়ে,সেই এক ও অদ্বিতীয় পরম করুনাময়, দয়াল স্রষ্টার নামে পড়ছি
৪২. তিনি আল্লাহ (একমাত্র তাঁরই এই ক্ষমতা রয়েছে), যিনি মৃত্যু এলে বা ঘুমের সময় আত্মাকে তুলে নেন। তারপর যার মৃত্যু অবধারিত তার আত্মা রেখে দেন। আর অন্যদের আত্মা নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ফিরিয়ে দেন। সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগকারীদের জন্যে এর মধ্যে শিক্ষণীয় নিদর্শন রয়েছে!
৪৩. হায়! এরপরও ওরা আল্লাহর পাশাপাশি (অন্যদের স্রষ্টার পরিবর্তে বিধানদাতা, আইন প্রণেতা, ক্ষমতার কাল্পনিক উৎস বানিয়ে) বেছে নিয়েছে সুপারিশকারী হিসেবে।
ওদের জিজ্ঞেস করো, ‘ওদের কোনো ক্ষমতা বা বোঝার শক্তি না থাকলেও?’
৪৪. বলো, ‘সুপারিশ করার ক্ষমতা পুরোপুরিই আল্লাহর এখতিয়ারে। মহাকাশ ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব শুধু আল্লাহর। শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে।’
এক ও অদ্বিতীয় স্রষ্টায় বিশ্বাসীরা কখনো সার্বভৌমত্ব কোন দেশ, জমিন, কাগজ বা মানুষের হাতে লিখিত কিতাবে আরোপিত করতে পারে না — স্রষ্টার সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করানোর কুটকৌশল হিসেবেই সার্বভৌমত্ব আরোপ করা হয় মানুষের সৃজিত পলিটিক্যাল বাউন্ডারি দিয়ে বিশ্বকে খন্ড বিখন্ড করে, জাতিতে জাতিতে ভেদাভেদকারী রাষ্ট্রের উপর, আরোপিত হয় গণতান্ত্রিক সংবিধানের উপর, সার্বভৌমত্ব ও সুপ্রিম বলা হয় সিকিউরিটি কাউন্সিল বা সেকুলার সুপ্রিম কোর্টকে
৪৫. যারা আখেরাতে জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করে না (চিনে রাখুন, এরাই সেই গণতন্ত্রের ধ্বজ্জাধারী সেকুলারিস্ট), শুধু এক আল্লাহর কথা বলা হলে তাদের মন বিতৃষ্ণায় সংকুচিত হয়ে যায়। আর আল্লাহ ছাড়া কল্পিত উপাস্যদের কথা উল্লেখ করা হলে ওরা আনন্দে উল্লসিত হয়ে ওঠে।
সারাদিন এদের মুখে স্রষ্টাবিরোধী ‘জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস’ সহ আরো বিভিন্ন তাগুতি স্লোগানের খই ফোটে, অথচ এরা জনগনকে ধোঁকা দেওয়া ও জনগনের অর্থ লুটপাটকেই তাদের রাজনৈতিক ব্যবসায় পরিণত করে — এরাই নব্য মুনাফিক যারা একদিকে ভাব দেখায় জনগনের জন্য তাদের দরদের শেষ নেই, আবার এরাই জনগনের টাকা দেদারছে লুট করে, তাদের সকল অধিকারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নিজেদের ভোগবিলাসকেই একমাত্র প্রাধান্য করে; অথচ ভোটের আগে তাদের দুয়ারেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট ভিক্ষা চায়, ভোটের পর অধিকাংশ সময়েই জনগনকে ভুলে যায় — এই হলো এদের মুনাফেকি বা দুমুখো চরিত্র
৪৬. বলো, ‘হে আল্লাহ! মহাকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা! দৃশ্যমান ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! তোমার বান্দারা যে-বিষয়ে মতবিরোধ করছে, তুমি এর ফয়সালা করে দিও।’
৪৭. জালেমরা যদি পৃথিবীর সব সম্পদ বা তার দ্বিগুণ সম্পদের মালিকও হয়, তবে মহাবিচার দিবসে তারা কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তির জন্যে মুক্তিপণ হিসেবে তা দিতে চাইবে (কিন্তু তা গ্রহণ করা হবে না)। ওরা তখন এমন অবধারিত বাস্তবতার মুখোমুখি হবে, যা ছিল ওদের কল্পনার বাইরে।
৪৮. ওদের সারাজীবনের দুষ্কর্ম ওদের সামনে দৃশ্যমান হবে আর যে মহাশাস্তি নিয়ে ওরা হাসি-তামাশা করত, তা ওদের ঘিরে ফেলবে।
কুরআনের ২৩তম সুরা, সুরা মু’মিনুনে বিশ্বস্রষ্টা বেশ কিছু প্রশ্ন করেছেন আমাদের বিবেকের কাছে যার কিছু এখানে তুলে ধরা হলো (বোল্ড করা):
৫৫-৫৬. ওরা কি মনে করে যে, ওদের যে (যোগ্যতা, মেধা, কর্মক্ষমতা) সম্পদ ও সন্তানসন্ততি দান করেছি, তা শুধু বৈষয়িক সাফল্য লাভে প্রতিযোগিতা করার জন্যে? এটাই সৎকর্ম? না, তা নয়! ওরা আসলে বুঝতে পারছে না (এটাই ওদের একটা পরীক্ষা)!
৫৭-৬১. আসলে যারা তাদের প্রতিপালকের (বিরাগভাজন হওয়াকে) ভয় করে, যারা তাঁর বাণীকে বিশ্বাস করে, যারা তাঁর সাথে কাউকে শরিক করে না, যারা তাঁর কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে — এই বিশ্বাস নিয়ে কম্পিত হৃদয়ে অন্তর থেকে দান করে, তারাই সৎকর্মে (নিজের সাথে) আসল প্রতিযোগী, তারাই সৎকর্মে অগ্রগামী।
৬২. (হে মানুষ!) আমি কারো ওপরই সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করি না। কে কতটুকু করতে পারবে বা পারবে না, আমার লিপিকায় তা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ আছে। কারো ওপরই অন্যায় করা হবে না। ৬৩-৬৪. আফসোস! (ধর্মের একত্বকে যারা ছিন্নভিন্ন করেছে) তাদের অন্তর অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন। (ধর্মের একত্বকে ছিন্নভিন্ন করা ছাড়াও) তাদের আমল আরো খারাপ। তারা তাদের এই অপকর্ম অব্যাহত রাখবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তাদের মধ্য থেকে ভোগবিলাসে নিমজ্জিতদের কঠিন আজাবে পাকড়াও করব। তখন তারা আর্তনাদ করে আমার কাছে প্রার্থনা করবে।
৬৫-৬৭. তখন তাদের বলা হবে, ‘আজ আর্তনাদ বা প্রার্থনা করে কোনো লাভ নেই। তোমরা আজ নিষ্কৃতি পাবে না। আমার বাণী যখন তোমাদের শোনানো হতো, তখন তোমরা কেটে পড়তে। আর দম্ভভরে এগুলো নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অবাস্তব অর্থহীন আলোচনা ও গালগল্পে সময় কাটাতে।’
৬৮. আসলে ওরা কি কখনো আল্লাহর বাণীকে বোঝার চেষ্টা করে নি? নাকি ওদের কাছে এমন কিছু নাজিল হয়েছে, যা ওদের পূর্বপুরুষদের কাছে আসে নি? ৬৯. অথবা ওরা কি ওদের রসুল সম্পর্কে কিছু জানে না বলে তাকে অস্বীকার করছে? ৭০. বা ওরা কি বলে, সে উন্মাদ? না, তা নয়। আসল সত্য হচ্ছে, রসুল ওদের কাছে সত্যবাণী নিয়ে এসেছে আর ওদের অধিকাংশই এ সত্যকে অপছন্দ করে।
৭১. আসলে সত্যধর্ম যদি ওদের কামনা-বাসনার অনুগামী হতো, তবে মহাকাশ ও পৃথিবী এবং এর মধ্যে অবস্থিত সবকিছুই তছনছ হয়ে যেত। অথচ (এ ওহীর মাধ্যমে) আমি তো ওদের কল্যাণের জন্যেই উপদেশ দিয়েছি। কিন্তু (কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই) ওরা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
৭২. অথবা (হে নবী!) তুমি কি ওদের কাছে কোনো প্রতিদান চাও? তোমার জন্যে তোমার প্রতিপালকের প্রতিদানই উত্তম এবং তিনি শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।
৭৩-৭৪. (হে নবী!) তুমি অবশ্যই ওদের সাফল্যের সরলপথে ডাকছ। কিন্তু যারা আখেরাতে জবাবদিহিতার বিষয় মেনে নিতে অস্বীকার করবে, তারা সাফল্যের পথ থেকে বিচ্যুত হতে বাধ্য। ৭৫. আমি ওদের দয়া করলেও, বর্তমান বিপদ মোচন করলেও ওরা অবাধ্যতার বিভ্রান্তিতেই ঘুরপাক খাবে। ৭৬. আমি ওদের বালা-মুসিবতে নিমজ্জিত করেছি, কিন্তু ওরা প্রতিপালকের সামনে বিনত হয় নি বা কাতর প্রার্থনাও করে নি। ৭৭. (পরকালে) যখন ওদের ওপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির দরজা খুলে দেবো, তখন ওরা নিমজ্জিত হবে জমাট হতাশা ও হা-হুতাশে।
৭৮. (হে মানুষ! আল্লাহর কথা শোনো! কারণ) তিনি তোমাদেরকে দেখা ও শোনার শক্তি দিয়েছেন, বিচার-বিবেচনা করার জন্যে দিয়েছেন মন (চিন্তা করার শক্তি)। তারপরও তোমরা কত কম শুকরিয়া আদায় করো! ৭৯. তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে আধিপত্য দিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত তোমরা তাঁর কাছেই সমবেত হবে। ৮০. তিনিই জীবন দান করেন, তিনিই মৃত্যু ঘটান। রাত ও দিনের আবর্তন তাঁরই নিয়ন্ত্রণে। এরপরও কি তোমরা তোমাদের সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে না?
৯৯-১০০. (যারা আখেরাতকে অস্বীকার করে আত্মপ্রবঞ্চনায় লিপ্ত) তারা মৃত্যুর মুখোমুখি হলে কাতর প্রার্থনা করে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একবার পৃথিবীতে ফেরত পাঠাও, যাতে আমি কিছু সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি পূর্বে কখনো করি নি।’ কিন্তু কখনো নয়, তা হওয়ার নয়। কারণ মৃতের সাথে জীবনের একটি অন্তরায় থাকবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।
১০১-১০৪. পুনরুত্থানের জন্যে যেদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে, সেদিন কোনো আত্মীয়তা থাকবে না, কেউ কারো খোঁজ নেবে না। যাদের (সৎকর্মের) পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফল। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারা আসলে নিজেরাই নিজেদের বিনাশ করেছে, তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। সেখানে ওরা থাকবে চিরকাল। আগুনে ওদের মুখ ঝলসে হবে বীভৎস।
১০৫. (তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন) কেন, তোমাদের সামনে কি আমার বাণী পাঠ করা হয় নি? কেন তোমরা তখন তা অগ্রাহ্য করেছিলে? ১০৬-১০৭. ওরা আর্তনাদ করে বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! দুর্ভাগ্যের শৃঙ্খলে আমরা বন্দি ছিলাম ও আমরা পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম। হে আমাদের প্রতিপালক! এই আগুন থেকে আমাদের রক্ষা করো। এরপর যদি কখনো সত্য অস্বীকার করি, তবে নিশ্চয়ই আমরা জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
১০৮. আল্লাহ বলবেন, ‘তোমরা এখন লাঞ্ছনা ভোগ করতে থাকো। আমাকে কিছু বলে কোনো লাভ নেই।’
১০৯. স্মরণ করো! আমার বান্দাদের মধ্যে একদল প্রার্থনা করত, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান এনেছি, তুমি আমাদের ক্ষমা করো, তুমি আমাদের দয়া করো। তুমিই করুণানিধান।’ ১১০. কিন্তু তাদের নিয়ে তোমরা হাসিতামাশায় এত বিভোর থাকতে যে, আমার কথাই তোমরা ভুলে যেতে। হায়! তোমরা তাদের নিয়ে শুধু হাসিতামাশাই করেছ। ১১১. কিন্তু বিশ্বাসীদের ধৈর্যের জন্যে আমি তাদেরকে পুরস্কৃত করলাম, তারাই আজ সফল।
১১২-১১৩. আল্লাহ তখন (সাজাপ্রাপ্তদের) জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা পৃথিবীতে কত বছর ছিলে? ওরা বলবে, একদিন বা তার কম সময়। আপনি বরং যারা সময় গণনা করতে জানে, তাদের জিজ্ঞেস করুন। ১১৪. আল্লাহ বলবেন, আসলে তোমরা খুব অল্প সময়ই পৃথিবীতে ছিলে। (আফসোস! তোমাদের পার্থিব আয়ুষ্কাল যে এত অল্প) একথা যদি সেদিন বুঝতে! ১১৫. তোমরা (কত নির্বোধের মতো) মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না।
১১৬. (এখন বুঝতেই পারছ) আল্লাহ মহান! সর্বশক্তিমান! তিনিই চূড়ান্ত সত্য! তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি মহিমান্বিত আরশের একাধিপতি। ১১৭. যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে, কোনো সনদ ছাড়াই অন্য উপাস্যের উপাসনা করে, তার হিসাব তার প্রতিপালকের কাছে রয়েছে। এ ধরনের সত্য অস্বীকারকারীরা কখনো সফল হবে না!
১.
মামুন ঢাকার একটি স্বনামধন্য স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ে। তার স্কুলের যে অংক শিক্ষক তিনি সম্প্রতি চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়ায় তাদের স্কুলে একজন নতুন অংক শিক্ষক প্রয়োজন।
মামুনের স্কুলের প্রধান শিক্ষক আকবর চৌধুরী দারুনভাবে ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। গণতন্ত্রের আদর্শ যেন ছাত্রদের অল্প বয়সেই শেখানো যায় তার জন্য সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ছাত্রদের ভোটের মাধ্যমেই তাদের অংক শিক্ষক নিবার্চন হবে। হাজার হলেও নির্বাচনের মাধ্যমে সব কিছু নির্ধারন করার যে পদ্ধতি গণতন্ত্রে রয়েছে নিশ্চই সেটাই সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ। এর থেকে উন্নত পদ্ধতি আর কিছু হতে পারে না এবং তিনি তার স্কুলের মাধ্যমেই একটা উদাহরন সৃষ্টি করতে চান।
২.
অংক শিক্ষক পদে নমিনেশন কেনার জন্য আকবর সাহেব তার স্কুলের দেওয়ালে নোটিশ টানিয়ে দিয়েছেন। ত্রিশ হাজার টাকা করে তিনি নমিনেশন ফর্ম বিক্রি করছেন। যেহেতু স্বনামধন্য স্কুল, তাই ফর্মের ডিমান্ড হাই। ইতিমধ্যেই নমিনেশন কিনেছেন ক্রিকেটার তামিম আহমদ, মডেল ও সিনেমা অভিনেত্রী শম্পা খালিফা, ব্যান্ডের সঙ্গীত শিল্পী শুভ্র নাথ দেব, ফুটবলার কায়সার হামিদ, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংকে মাস্টার্স ও মেধাবী শিক্ষক ফয়সাল ইসলাম, ম্যাজিশিয়ান ডায়মন্ড আইচ।
আকবর সাহেব ঠিক করেছেন অংশ শিক্ষক পদপ্রার্থী সবাইকে ক্লাসের সামনে আধা ঘন্টা করে পারফর্ম করতে দেবেন। তারপরে একটা ভোটাভুটি হবে এবং যার পক্ষে বেশি ভোট হবে তাকেই অংক শিক্ষক হিসেবে পদ দেওয়া হবে।
৩.
মামুনদের স্কুল ক্যাম্পাসে আজকে ভোট। চারিদিকে ব্যাপক উৎসব মুখর পরিবেশ।
ক্লাসে সবাই ভিষন উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষা করছে। একজন জোকার এসে সবাইকে আনন্দ দিয়ে গেলো প্রথমেই। এরপরে একে একে একেকজন প্রার্থি প্রবেশ করবে সবার উদ্দেশ্যে তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করতে, তাকে কেন সবাই নির্বাচন করবে সে বিষয়ে বক্তব্য ও পার্ফমেন্স প্রদান করতে।
প্রথমে মঞ্চে আসলো সঙ্গীত শিল্পী শুভ্র দেব নাথ। সে এসেই ছোটদের উপযোগী দুটো গান গেয়ে সবাইকে মাত করে দিলো। তারপর তার ভলান্টিয়াররা লটারী করে ক্লাসের তিনজনকে তিনটা গিটার উপহার দিলো। তার প্রতিশ্রুতি, তাকে অংকের শিক্ষক করলে তিনি সবার জন্য গিটার সহজলভ্য করবে। ছাত্ররা তুমুল করতালিতে ফেটে পড়লো!
এরপরে আটোসাটো পোশাকে মঞ্চে হাজির মডেল ও সিনেমা অভিনেত্রী শম্পা খালিফা। শম্পা মুখ খোলার আগেই ছাত্ররা আবারও করতাালি, কেউ কেউ শিষও দিয়ে ফেললো। স্মার্ট মডেল শম্পা জানে কিভাবে কোথায় মনোযোগ টানতে হয়। সে তার মিউজিক শুরু করলো, পুর্ব থেকে রেকর্ড করা মিউজিকে লিপ সিংগিং এবং ব্যাপক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তার গান শেষ হলো। ওয়ান মোর, ওয়ান মোর — মঞ্চ থেকে রিকোয়েস্ট। হেড মাস্টার ইশারায় অনুমতি দিলে শম্পাকে আরেকটা পারফর্ম করতে হলো। সে মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার আগে গলায় প্রচন্ড আবেগ দিয়ে ছাত্রদের অনুরোধ করলো তাকে ভোট দিতে। সে অংকের শিক্ষক হলে প্রতি সেমিস্টারে অন্তত দুটো করে কনসার্ট হবে স্কুলে। তাকে যেন সবাই ভোট দেয়।
এরপর ক্রিকেটার তামিম আসলো মঞ্চে আলো ছড়াতে। সে জাতীয় দলের জার্সি পড়ে হাতে ব্যাট ও মাথায় হেলমেট পড়ে নাটকিয় ভাবে মঞ্চে আগমন করলো। সরাসরি প্রতিশ্রুতিতে চলে গেলো সে, তার একটাই কথা অংকের শিক্ষক যদি সে হতে পারে তা হলো স্কুলে একটা ক্রিকেট একাডেমি হবে যেখানে ব্রেট লি বোলিং শিখাতে আসবে, তেন্ডুলকার, শেওয়াগ আসবে গেস্ট ব্যটিং কোচ হিসেবে, সেরা প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা এই স্কুলকে সারা পৃথিবীর কাছে মডেল হিসেবে তুলে ধরবে। ছাত্রদের মধ্যে ইউফোরিয়া। অন্যান্য শিক্ষকরাও ভিষন অনুপ্রাণিত। না! তামিমকেই তাদের দরকার।
এরপর মেধাবী শিক্ষক ফয়সাল এলো। সে কিভাবে অংক আনন্দের সাথে শেখা যায়, সে কিভাবে অংককে সহজ করে সবার সামনে তুলে ধরবে এগুলো নিয়ে বলতে গিয়ে ‘দুয়ো’ খেলো। ছাত্ররা এসব কথা শোনার আগ্রহে আর নেই। তারা পরবর্তি প্রার্থী ও যাদুকর ডায়মন্ড আইচের যাদু দেখতে চায়। মঞ্চ ত্যাগ করলেন সম্ভবত অংক শিক্ষক হওয়ার সবচেয়ে উপযোগী ব্যক্তিটি।
অত:পর যাদুকরের যাদু দেখানোর পালা। তার যাদুতে সবাই মুদ্ধ। যাওয়ার আগে সে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলো যদি নির্বাচিত হতে পারে তবে পৃথিবীর সেরা যাদুর ট্রিকসগুলো সে সবাইকে শেখাবে।
ভোটে যে কে জিতবে বলা যাচ্ছে না! সবার মধ্যে টান টান উত্তেজনা।
৪.
সবশেষে প্রধান শিক্ষক মঞ্চে আসলো এবং সবার মধ্যে প্রার্থি লিস্ট বিতরন করা হলো। সবাইকে একজন করে প্রার্থি নির্বাচন করতে বলা হলো। দুইদিন পরে ভোটের রেজাল্ট দেওয়া হবে বলে জানানো হলো।
দুইদিন পরে জানা গেলো স্বনামধন্য এই স্কুলের অংকের শিক্ষক হিসেবে ছাত্ররা তাদের গণতন্ত্রের চর্চার মাধ্যমে মডেল ও সিনেমা অভিনেত্রি শম্পা খালিফাকে নির্বাচিত করেছেন। মাত্র কয়েকটি ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছে ক্রিকটোর তামিম। সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছে মেধাবী শিক্ষক ফয়সাল।
সবাইকে ভোটের ফলাফল মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়ে শম্পার হাতে নিয়োগ পত্র তুলে ধরলেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলে আজ গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
৫.
বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের নামে নমিনেশণ পদ্ধতি থেকে শুরু করে এমপি নির্বাচন ও কেবিনেটে কারা মন্ত্রী হবে, সেই পদ্ধতিটাও অনেকটা উপরের গল্পের মতো।
একটা স্কুলে যখন অংকের শিক্ষক প্রয়োজন, তখন আসলে কি হয় বা হওয়া উচিত।
অংক যে শেখাতে পারবে তার কোয়ালিফিকেশন যাচাই করার জন্য কিছু মানুষের প্রয়োজন যাদের ঐ বিষয়টি পড়ানোর লোকটিকে যাচাই করার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আছে।
এজন্য হয়তো অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি হয় এবং তারাই অংকের শিক্ষকের জন্য আবেদন করতে পারে যাদের ঐ বিষয়ে যোগ্যতা আছে, যাদের পাঠ দানের অভিজ্ঞতা ও মেধাভিত্তিক যোগ্যতা আছে। এছাড়া কেউ কি অংকের শিক্ষকের জন্য আবেদন করতে পারে নাকি পারা উচিত?
যারা ভোট দিবে বা নির্বাচন করবে (এই গল্পে ক্লাস সিক্সের ছাত্র) তারা যদি ঐ যোগ্য ব্যক্তির যোগ্যতা পরিমাপ করার যোগ্যতা না থাকে তাহলে সেই গোপন ভোটের কি আসলে কোন মূল্য আছে? এক্ষেত্রে ম্যানিপুলেশনের সম্ভাবনাই পুরোটা ।
এবার আশা যাক গোপন ভোটের বিষয়।
যদি যোগ্য লোকের একটি কমিটি থকে যারা ধরে নেওয়া যাক অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সমন্ময়ে তৈরী। এরা যদি গোপনে ভোট দেয় এবং জানা না যায় কে কাকে ভোট দিলো, তাহলেও কিন্তু ম্যানিপুলেশন, বিহাইন্ড দা সিন ইনফ্লুয়েন্স বা প্রভাবের সম্ভাবনা থাকে। এই কমিটি ভোট দিবে ওপেন ভাবে, যেন তারা ডিফেন্ড করতে পারে কেন তারা অমুক ক্যান্ডিডেট বাদ দিয়ে তমুক ক্যান্ডিডেটকে ভোট দিয়েছেন। কেউ হয়তো ক্যান্ডিডেটের একাডেমিক কোয়ালিফিকেশনের কারনে তাকে যোগ্য মনে করে, কেউ হয়তো প্রেজেন্টেশন স্কিলকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, কেউ হয়তো পূর্বে পড়ানোর যোগ্যতাকে। কিন্তু যেটাকেই তারা ফ্যাক্টর মনে করছে, জনগনের (ছাত্র ও ছাত্রদের অভিভাবকদের) সেটা জানার অধিকার আছে।
ওপেন ভোটিং হলে এই যে কমিটি সেটার জবাবদিহিতা পরিস্কার থাকবে। নইলে সিলেকশনের আগের রাতে কোন প্রার্থী তার টাকার গরমে যে কমিটিকে ইনফ্লুয়েন্স করবে না, তার কোন চেক এন্ড ব্যালেনস থাকবে না। ওপেন ভোটিংয়ের এটাই সুবিধা যে সবাই জানবে কে কাকে ভোট দিয়েছে এবং এই সিলেকশন হবে মেধার ভিত্তিতে।
Photo by Element5 Digital from Pexels
৬.
বর্তমান প্রচলিত গণতন্ত্রের মডেলে ঐ স্কুলের ছাত্রদের মতো যখন অবুঝ জনগন না বুঝে, ক্যান্ডিডেটের যোগ্যতার বাছবিছার করতে যারা অপারগ, আর তারচেয়েও বড় সমস্যা এই নমিনেশন যারা নিচ্ছে তারা আসলে কোন ধরনের মেরিট বা যোগ্যতার মাপকাঠি পার হয়েই আসছে না। একজন চোর ব্যবসায়ী, টাকাওয়ালা সন্ত্রাসী, দেহব্যবসা আর ইয়াবা কিং যেকেউ নমিনেশন নিচ্ছে, টাকার গরমে প্রচারণা করে মাঠ গরম করে রাখছে এবং যারা ভোট দেবে সেই পুরো সিস্টেমকে রিগিং করা কোন বিষয় না।
এই গণতন্ত্র আসলে আপাদমস্তক ভুলে ভরা এবং জনগনকে একটা ইলিউশন অফ চয়েস ছাড়া আর কিছুই দেয় না। যারা এই পদ্ধতির ধ্বংজ্জাধারী তারা বাকিদের বুঝতেও দেয়না যে সিস্টেমটা কতটা অলীক!
৭.
জানতে চাইতে পারেন তাহলে বিকল্প কি?
ঐ স্কুলের উপমা গল্পে ফিরে যান। ওখানেই হিন্টস আছে।
স্কুলের বাচ্চারা ঠিক যেভাবে মোটেও রাইট ফিট না তাদের অংক শিক্ষক নির্বাচনের জন্য। ইনফ্যাক্ট তাদের নির্বাচন করতে দিলে তারা অবশ্যই ভুল সিদ্ধান্ত নিবে। তাদের কাছে একজন ক্রিকেটার বা এন্টারটেইনারের আবেদন বেশি হবে।
আজকের দিনের নির্বাচনের ট্রেন্ডেও দেখবেন মুখে রঙ মাখা অভিনেতা অভিনেত্রি এবং টাকার বিনিময়ে লোককে আনন্দ বিনোদন দেওয়া নাচ, গান, পেশাজীবি খেলোয়ার — এরাই ভোটে দাড়াবে আরো বেশি করে।
অথচ একটা স্কুলে একজন প্রধান শিক্ষক বা কোন বিষয়ে নিয়োগ দিতে হলে একটা বুদ্ধিসম্পন্ন গ্রুপ অফ পিপল লাগে যারা সঠিক লোকদের মধ্যে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে একজনকে সিলেকশন করবে।
দেশের অর্থনীতি তুলে দিবেন যার হাতে, তার ইকোনমিক্সের পোর্টফোলিও কি? দেশের শিক্ষানীতি যে দেখভাল করতে বা পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে এবং দেশের পুরো ভবিষ্যত প্রজন্মের উন্নয়ন যাদের হাতে, তাদের যোগ্যতা মাপবনে কি কে কত লোক হাসাইছে, কার চেহারা কত সুন্দর বা ক্যামেরার সামনে কে কত ইমোশনাল পোজ দিছে তার উপরে।
বর্তমানের গণতন্ত্র আসলে ইলিউশন অফ চয়েস ছাড়া কিছু না, সঠিক মেধার লোকের কমিটির মাধ্যমে সিলেকশনই হওয়া উচিত সঠিক পদ্ধতি। নাইলে শুধু মার্কা চেইঞ্চ হবে, লুটপাট ও আখের গুছানো কিন্তু অব্যহতই থাকবে। জনগন বা ঐ ক্লাসের ছাত্ররা যতই তৃপ্তির ঢেকুর তুলুক না কেন।
জনৈক মালিক, ফায়জুল সাহেব প্রায় ছয় মাসের জন্য কানাডা যাচ্ছেন। তার পরিবার ইতিমধ্যেই কানাডা প্রবাসী। ঢাকার বিশাল বাড়িতে তিনি আর তার একজন কেয়ারটেকার এবং ম্যানেজার থাকে। ব্যবসায়ী মানুষ ফায়জুল সাহেবের একাধিক ব্যবসা থাকার কারনে অনেক ধরনের দাায়িত্ব যা তিনি তার দুই কর্মচারী, কেয়ারটেকার আর ম্যানেজারের মধ্যে বন্টন করে বেশ বড় দুটি লিস্ট ও নির্দেশনামুলক চিঠি লিখেছেন। এতে বলা আছে কোন ব্যাংকে কত টাকা মাসিক কিস্তির লোন পরিশোধ করতে হবে, কোন ফ্যাক্টরিতে কি ধরনের নির্দেশনা দিতে হবে, অন্যান্য ব্যবসায়ী এ্যাসোসিয়েটসদের কি বলতে হবে, কোথায় কবে কি করতে হবে ইত্যাদি।
২.
আজ রাতে ফায়জুল সাহেবের ফ্লাইট। তিনি যাওয়ার আগে বিকেলে কেয়ারটেকার এবং ম্যানেজারকে ডেকে পাঠালেন। তাদের হাতে মুখ বন্ধ দুটো চিঠি ধরিয়ে ভালো করে নির্দেশনা দিলেন যে তিনি যাওয়ার পর দুইজনই যেন এই চিঠি খুলে পড়ে, কাজগুলো ভালো করে বুঝে নেয় এবং সেই অনুসারে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে। দু’জনেই ফায়জুল সাহেবের সাথে দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি ধরে কাজ করেছেন, উভয়েই প্রতিশ্রুতি দিলো যে তারা তা করবে। ফায়জুল সাহেব ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বললেন এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে।
৩.
কেয়ারটেকার কামাল উদ্দিনের প্রকৃতিটা হলো ভক্ত টাইপ। তিনি ফায়জুল সাহেবের খুবই অনুরক্ত এবং বস যে তাকে মুখবন্ধ চিঠি দিয়েছে এতে সে ভিষণ গর্বিত ও খুশিতে গদগদ। হাজার হলেও বসের স্পেশাল মুখবন্ধ চিঠি! সে পরেরদিনই স্টেশনারীতে গিয়ে খুব দামী একটা ফাইল কিনে আনলো, চিঠির খামটা সেই ফাইলে ঢুকিয়ে তার তালাওয়ালা আলমিরার সবচেয়ে উপরের তাকে খুব যত্ন করে, রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে রাখলো। হাজার হোক, বসের চিঠি। বাইরে রাখলে খাম যদি ধুলো বালিতে ময়লা হয়ে যায়!
প্রায় দু’একদিন পরপরই কামাল উদ্দিন আলমিরা খুলে কাপড় ভাঁজ সযত্নে সরিয়ে চিঠিটা দেখে, খামে কেমন একটা সুন্দর গন্ধ আছে সেটাও নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেয়, তারপর আবার আগের চাইতেও যত্ন নিয়ে সুন্দর করে কাপড়ের ভাঁজে চিঠি রাখে। তার মনে পড়ে কেউ একজন তাকে বলেছিলো যে দামী জিনিস যত্ন আর ভক্তি করে রাখতে হয়! তার আশা চিঠিটাকে খুব যত্ন করে আগলে রাখলে মালিক খুব খুশি হবে এবং একদিন তার অনেক প্রশংসা ও পুরস্কার মিলবে নিশ্চই তার এই ডেডিকেশনের জন্য। চিঠিটা ধরার আগে সে হাত ভালো করে লিকুইড সোপ দিয়ে ধুয়ে প্রথমে ড্রায়ারে শুকায়, তারপর পরিস্কার টাওয়ালে হাত মোছে। বাইচান্স হাতের ময়লা যদি সাদা শুভ্র খামে দাড় বসিয়ে দেয়।
হাজার হোক, বসের চিঠি !
৪.
ম্যানেজার রাজীব আহমেদ অতটা অন্ধ ভক্ত নয়। সে প্র্যাক্টিক্যাল বা বাস্তবাদী। ফায়জুল সাহেব চলে যাওয়ার পরের দিন সে চিঠিটা খুললো এবং মনোযোগ দিয়ে দুইবার পড়লো; তার ডায়েরীতে প্রত্যেকটা বিষয়ে কি কি করতে হবে, কাকে ফোন দিতে হবে, কোন ব্যাংক বা অফিসে কি কাজ তার লিস্ট করে সে অনুসারে কাজ শুরু করে দিলো।
৫.
ছয় মাস পরে কানাডা থেকে ফিরে কোন কর্মচারীর প্রতি বস বেশি খুশি হবে?
কামাল উদ্দিন, যে বসের প্রতি অতি ভক্তির ঠ্যালায় চিঠিটা আলমিরার উঁচু তাকে রেখে, মাঝে মাঝে বের করে নেড়েচেয়ে আহাউহু করে কাপড়ে মুড়িয়ে রেখে দিতো, সেই কামালকে?
নাকি, রাজীব আহমেদ যে ঐ চিঠি যে উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে সেটা বুঝে, পড়ে, সে অনুসারে কাজ করতো?
৬.
মানুষের স্রষ্টাও আমাদের জন্য একটা চিঠি পাঠিয়েছে। সেটার নাম তিঁনি নিজেই দিয়েছেন হুদা (সঠিক পথের দিশারী), কালামাল্লাহ ও কাওল (আল্লাহর কথা), মুবিন (আলোকময়), ফুরকান (সত্য মিথ্যার প্রভেদকারী), মাউইযা (সতকর্তা), মুসাদ্দিক (সত্যায়নকারী), হিকমা ও হাকিম (প্রজ্ঞাময়), আহসান হাদীস (শ্রেষ্ঠ বার্তা), নাবাউন আজিম (সুপ্রিম বার্তা/ খবর), বাসাইর (চোখে খুলে দেওয়ার মতো প্রমান), তাযকিরা (স্মরণ করিয়ে দেওয়ার বার্তা), আমর আল্লাহ (স্রষ্টার নির্দেশ), বুশরা (সুসংবাদদানকারী), বালাগ (যথেষ্ট বা পরিপূর্ণ বার্তা), নাযির (সতর্ককারী)।
অথচ বাস্তবে এটা এখনো কাপড়ে মুড়িয়ে ঘরের সবচেয়ে উপরের তাকে রাখা অবহেলিত একটা চিঠি। কিছু ধর্মের ঠিকাদার যারা শয়তানের এজেন্সি নিছে তারা বিভিন্ন অযুহাতে এটা যেন পড়া না হয়, পড়লেও যেন না বুঝে, বোঝার এ্যাটেম্পটও যেন না নেয় তার যাবতীয় কাজ করে সেটাকে ভক্তির বিষয় ও ধর্ম পালনের মোড়ক লাগিয়ে দিয়েছে (কেউ এটা করেছে বুঝে, কেউ না বুঝে, কিন্তু ফলাফল একই)।
৭.
ছয়মাস পরের কথা, ফায়জুল সাহেব কানাডা থেকে ফিরে কামাল উদ্দিনের উপর বেজায় ক্ষিপ্ত। কামালের কারনে তার প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি লস। কামালের চাকরি নট। ম্যানেজার রাজীব ডাবল প্রোমোশন পেয়ে ফ্যাক্টরির জি.এম.।
৮.
আমাদেরও একদিন এ দুনিয়া ও মহাবিশ্বের সব কিছুর মালিকের সাথে এ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে। তিনি আদম ও তার সন্তানদের যে পৃথিবীতে তাঁর খলিফা বা প্রতিনিধি করে পাঠালেন, সেই প্রতিনিধিত্বের কি কি কাজ আমরা করেছি তার হিসাব একদিন আমাদের দিতে হবে। তার দেওয়া নির্দেশনামূলক চিঠি আমরা কে কে পড়েছি ও সে অনুসারে সচেতন হয়েছি, এবং সবচেয়ে বড় কথা যেটা, তা হলো প্রয়োগ করেছি; আর কে সেটিকে রেশমি কাপড়ে মুড়িয়ে তাকের শেষ থাকে তুলে রেখেছি অথবা সহীত ও সুললিত কন্ঠে পড়ার অর্থহীন প্রতিযোগিতা করেছি সেটার হিসাব হবে যেদিন — সেদিন বড় কঠিন দিন।
স্রষ্টা আমাদেরকে যেন তাঁর অসীম অনুগ্রহের মাধ্যমে তাঁর পাক কালামের সাথে সম্পর্ক আরো বাড়িয়ে দিক!
হে মানবজাতি! তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সনদ পৌঁছে গেছে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট আলো অবতীর্ণ করেছি। — আল কুরআন ৪:১৭৪
তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? — ৪৭:২৪
আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? — ৫৪:৩২
পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস (Paralysis) এক প্রকার দৈহিক বিকার,যাতে মাংশপেশী স্বাভাবিক
কাজ করার বদলে দুর্বল বা শিথিলহয়ে থাকে। এতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পঙ্গুত্ব হতে
পারে।পক্ষাঘাত একটি বা দুটি পেশীতে হতে পারে, এক বা একাধিক অঙ্গে হতে
পারে বা পুরো শরীরে হতে পারে। অনেক সময়ই পক্ষাঘাতের সঙ্গে অবশতা অর্থাৎ স্পর্শ
অনুভুতির অভাব হতে পারে,কিন্তু সব সময় নয়।পক্ষাঘাত স্বল্পস্থায়ী হতে পারে অথবা
দীর্ঘ মেয়াদী হতে পারে। পক্ষাঘাত অন্য রোগের উপসর্গ অথবা একাই একটি ভয়াবহ রোগ
হিসাবে হতে পারে, আবার পক্ষাঘাত খুব মৃদু এবং স্বল্প মেয়াদী হতে পারে যা
আমরা প্রায় টেরও নায় না।দেখা গেছে গড়ে পঞ্চাশ জনের মধ্যে এক জনের অল্প বিস্তর
পক্ষাঘাত আছে। ব্যুৎপত্তিগতবাংলায় পক্ষাঘাত শব্দটি এসেছে "পক্ষ+আঘাত"
থেকে, স্ট্রোকঅথবা শিরদাড়ার একদিকেআঘাত লেগে অনেক সময় শরীরের
বিপরীত অর্ধেক অবশ এবং পঙ্গু হয়ে যায়।শরীরের এক অর্ধ অর্থাৎ এক পক্ষ আঘাত গ্রস্ত
হবার থেকেই সম্ভবতঃ এই শব্দটির উৎপত্তি।ইংরেজী প্যালসি (Palsy) শব্দটি প্যারালাইসিস বা
পক্ষাঘাতের প্রায় সমার্থক কিন্তু কয়েকটি বিশেষ পক্ষাঘাতের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়।
যেমনবেলস
প্যালসি বা মুখে পক্ষাঘাত।
পক্ষাঘাতের কারণসমুহঃ
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্তের
কারণে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত হয়৷ বিশেকরে স্পা্ইনাল কর্ডের ক্ষতিগ্রস্তের কারণে৷
সাধারণত মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, মাথায় কোনো রোগ, যেমন পারকিনসন্স
অথবা মস্তিষ্কে কোনো আঘাত পেলে এমনটা হতে পারে৷ বিজ্ঞানীরা বহুদিন থেকেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত
রোগীরা যাতে নিজেরাই অচল অঙ্গ পরিচালনা করতে পারেন সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন৷ কিন্তু মস্তিষ্কের
সংকেত পড়তে গিয়ে তাদের বেশ হিমশিম খেতে হয়৷ কেননা মস্তিষ্কের সংকেত খুব জটিলভাবে মাংসপেশীর
কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে৷কোনো স্নায়ুর দূরতম প্রদেশে আঘাত লেগে এর প্রত্যাঘাত মেরুমজ্জা
অথবা মস্তিষ্কে উপস্থিত হয়ে পক্ষাঘাত উৎপাদন করতে পারে। একে রিপ্লেক্স কস বলে । পক্ষাঘাতের
আক্রমণ হঠাৎই হয়ে থাকে কিন্তু এই পীড়া ধীরে ধীরে উৎপন্ন হতে পারে। পক্ষাঘাতকে কোনো
একটি নির্দিষ্ট স্থানে ব্যাধি বলে বর্ণনা করা যায় না। বস্তুত, স্নায়ুমন্ডলের
ক্রিয়ার হীনতা বা ধ্বংস হতেই পক্ষাঘাত জন্মে, সুতরাং এগুলোকে সর্বাঙ্গিক এবং
স্থানিক এই দুটি প্রধান শাখায় বিভক্ত করা যেতে পারে।
লক্ষণসমুহ :এই পীড়া প্রথমে হাতে আরম্ভ হয়
এবং সর্বপ্রথমে বৃদ্ধাঙ্গুলির পেশি আক্রান্ত হয়। গ্রীবা, বাহু অথবা হাতের
পেশিও প্রথমে আক্রান্ত হতে পারে। এই আক্রমণ ক্রমে সব পেশিমন্ডলীতে বিস্তৃত হয়ে পড়ে।
আক্ষেপ, স্পন্দন, কম্পন এবং বেদনা এর প্রধান লক্ষণ, শরীরে দুর্বলতা
এবং আলস্য লক্ষিত হয়, ব্যাধি যতক্ষণ হাতে আবদ্ধ থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত
একে সাধ্য বলা যায় কিন্তু সব পেশি আক্রান্ত হলে বিশেষ আশঙ্কার সম্ভাবনা। খাদ্য গ্রহন
পেশির এবং ভোকালকর্ডআক্রান্ত হলেই বিশেষ ভয়ের
কথা। কিন্তু এই ব্যাধির শেষ পর্যন্ত বুদ্ধির তীহ্মতা এবং শারীরিক সুস্থতা প্রায়ই অক্ষুণ
থাকতে দেখা যায়। আক্রান্ত পেশিতে ইলেকট্রিসিটির মতো স্পন্দন অনুভূত হয়। আক্রান্ত স্থান
প্রথমে শীতল ওভারবোধ, তথাকার স্পর্শশক্তি হ্রাসও পিপীলিকা চলার মতো মনে হয়। সামান্য
স্পন্দিত বা কম্পন হতে পরে আক্রান্ত স্থানেরক্ত সঞ্চালন ক্রিয়া হ্রাস হয়ে পেশিগুলো
শুষ্ক এবং স্পর্শ ও সঞ্চালন শক্তির হ্রাস হয়ে থাকে। কখনও কখনও আক্রান্ত অঙ্গাদি একেবারে
অবশ হয়। সচরাচর স্থানিক ও সর্ব্বাঙ্গিক এ দু’রূপে
পক্ষাঘাত দেখা যায়। স্ত্রী অপেক্ষা পুরুষের মধ্যেই এইব্যাধির প্রাচুর্য লক্ষিত হয়ে
থাকে, অনেকে একে পুরুষানুক্রমিক বলে ব্যাখ্যা করে থাকেন, একই পরিবারের
লোকই এইব্যাধি কর্তৃক আক্রান্ত হতে পারে অর্ধাঙ্গ পক্ষাঘাত: সচরাচর একদিকের হাত-পা, চর্বণ পেশি ও
জিহ্বার পেশি আক্রান্ত হয়। ডান অপেক্ষা বাম অঙ্গেই সচরাচর বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
গাল শিথিল হয়, মুখের কোনের ওপর দিকে উঠে যায়। জিহ্বা বের করলে তা আক্রান্ত
দিকে বেঁকে যায়। কথায় জড়তা ও বোধশক্তি ব্যাহত হয়। সহজেই অবসাদ ও সামান্য কারণেই দুঃখ
বা
কষ্ট ও চোখ দিয়ে পানি পড়ে। হাত-পা ক্রমশ শুষ্ক হতে থাকে। চিত্তবিভ্রম
ও হাত-পায়ের ও শারীরিক দুর্বলতা হতে থাকে। সেজন্য লিখতে অক্ষর ভুল করে। জিহ্বা ও ঠোঁট
কাঁপে, জিহ্বা বের হয়, কথা বলতে বলতে মধ্যে মধ্যেছেড়ে দেয়। কথা অস্পষ্ট, তোৎলামো, সর্বদা কাঁপে, শরীরের স্থানে স্থানে কম্পন,
ক্রমে চলতেও কাঁপতে
থাকে এবং পা স্থিত রাখতে পারে না। লেখার সময় হাত কাঁপে। নাড়ি দুর্বল, দ্রুত, চোখের তারা কখন সঙ্কুচিত, কোনো স্থানে বিস্তৃত থাকে ও অসম, একটা বড় একটা ছোট। অসাড়ে মলমূত্র ত্যাগ, কখন হাত-পায়ের আক্ষেপ,
কখন নিম্নাঙ্গ অবশের
কারণে কোষ্ঠবদ্ধতা, রোগী কথা বলতে অশক্ত, দাঁতে দাঁতে ঘর্ষণ করে। দাঁড়াতে বা চলতে অক্ষম হয়।
১. প্রথম অবস্থা : রোগ যখন শুরু হয়, তখন দেখা যায়,রোগী যেন কোনো বিষয়ে
মনস্থির করতে পারে না, মানসিকবৃত্তির গোলযোগ ঘটে।তার মনুষ্যজনোচিত
ক্রিয়াকলাপও হ্রাস পেতে থাকে।তার ফলে স্মৃতিশক্তি, বিচারক্ষমতা, বুদ্ধিবৃত্তিএমনকি নীতিজ্ঞান পর্যন্ত লোপ পায়, ভ্রান্ত বিশ্বাস জন্মে,
মনে করে সে বিপুল
সম্পত্তির অধিকারী হবে।
২. দ্বিতীয় অবস্থা : এই অবস্থায় পক্ষাঘাতের লক্ষণ সব প্রকাশ পেতে
থাকে। হস্তপদের কম্পন, মুখমন্ডলের কম্পন, জিহ্বার আড়ষ্টতা,
বাক্যের জড়তা প্রভৃতি
দেখা দেয়। লিখতে হাত কাঁপে, কোনো কোনো শব্দ বা অক্ষর পড়ে যায়, কথা বললেও ওইরূপ হয়,
কতক কথা বলে, কিছু বা বাদ পড়ে যায়। মনের দুর্বলতা, সময়ে সময়ে মৃগী রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়, কোনো কোনো শব্দ উচ্চারণে যেমন- প, ফ, ব,
ভ ওষ্ঠবর্ণে অসমর্থ
হয়, অনুপ্রাস বা একরূপ ব্যঞ্জনবর্ণের পুনঃপুন
বিন্যাস স্বরূপ শব্দালঙ্কার, আবৃত্তি করতে অসমর্থ
হয়, এই অবস্থাতে কোনো কোনো রোগীর কথা একেবারেই
বন্ধ হয়ে যায়।
৩. তৃতীয় অবস্থা : একে পরিণত অবস্থাও বলা যায়, রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে।অনুভব
শক্তি থাকে না, রোগী চলতে পারে না, কথাও অস্পষ্ট হয়,
মানসিক শক্তি লোপ
পায়, মৃগী বা সন্ন্যাস দেখা দিতে পারে, প্রথম অবস্থায় ভ্রান্তবিশ্বাস আরও প্রবল হয়; উন্মাদ অবস্থায় পূর্বে যাদের বুদ্ধির বিলক্ষণ দেখা যায়নি, এই অবস্থায়তাদের সম্পূর্ণ ডিমেনসিয়া (প্রোফাউন্ড মেন্টাল ইনক্যাপাসিটি)
বা বুদ্ধিহ্রাস উপস্থিত হয়। রোগী শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে।চিকিৎসা না হলে রোগী অবশেষে মৃত্যুমুখে
পতিত হয়।
পক্ষাঘাতের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচন কৌশলঃ
১) একোনাইট নেপিলাস: শুষ্ক শীতল বায়ু
প্রবাহে কিংবা মরুঝড়ে রক্তাধিক্যতার কারনে পক্ষাঘাত এবং আক্রান্ত স্হান ঠান্ডা
অনুভুত হলে এবং আক্রান্ত স্হানে অসারতা ও ঝিন ঝিণ অনুভুত হলে সেই রোগীর জন্য দ্রুত
একোনাইট নেপিলাস প্রয়োগ জরুরী। একোনাই বিফল হলে কষ্টিকাম প্রযোজ্য হবে। ২) এ্যাসকুলাস গ্লেবরাঃ পায়ের পক্ষাঘাত
এবংসংকোচন ভাব বিদ্যমান থাকরে সেই রোগীর এ্যাসকুলাসগ্লেবরা প্রয়োগ দরকার। ৩) এ্যাসকুলাস হিপঃহাতের পক্ষাঘাত হাত উঠাইতে পারে না, কোমরে দুর্বলতা ও অবশতার কারণে চলিতে না পারিলে এ্যাসকুলাস
হিপ এই রোগীর জন্য খুবইউপকারী ঔষধ।
৪) এগারিকাসঃনিম্ন-অঙ্গের পক্ষাঘাতসহ বাহুদ্বয়ের কম্প;মেরুমজ্জার
কোমলতার জন্য হাত পায়ে পক্ষাঘাত। লাম্বার প্রদেশে মেরুমজ্জার রক্তাধিক্যের কারনে
প্যারালাইসিস এবং তৎসহ প্যারালাইসিস অংগে তীব্র বেদনা। লাম্বার সেক্রাম প্রদেশে
বেদনা। বসিয়া থাকিলে বেদনা বৃদ্ধি।
হাত ও পায়ে ঝিনঝিন বেদনা। একপাশের হাত অপর পাশের পা পক্ষাঘাত হইলে এগারিকাস
উপযোগী।
৫) এলুমিনাঃমেরু মজ্জার বিকার বশতঃ পক্ষাঘাত।পায়ের তলায়
অবসতা; রাতে
যে রোগী অন্ধকারে হাটতে পারে না; চোখ বন্ধ করিয়া হাটিতে পারে না সেই রোগীর
জন্য এলুমিনা উপযোগী।
৬) এপিস মেলঃডিপথেরিয়া, টাইফয়েড, মেনিঞ্জাইটিস
প্রভৃতি রোগ ভোগের পর পক্ষাঘাত; দেহের একপাশে পক্ষাঘাত; অপর
পাশে কম্প; দেহের নিচের অংশ নীল ও শীতল। এই লক্ষণ
সমষ্টিসহ এপিস মেলের ধাতুগত মিল যে রোগীর মাঝে পাওয়া যাবে সেই রোগীর জন্য এটি
গুরুত্বপুর্ণ ঔষধ।
৭)আর্জেন্ট
নাইট্রিকামঃ গ্ল্যান্ডের উপর আঘাত বশতঃ রক্ত বা
রসস্রাব জনিত পক্ষাঘাত। ডান পাশের পক্ষঘাত;শীতল ও সিক্ত আবহাওয়ায়
বৃদ্ধি। আর্নিকা ব্যবহারে রক্তের ক্লট শোষিত হয়ে রোগ আরোগ্য হয়।
৯)আর্সেনিক এলবম:
রোগীর
পেশীসমুহ ক্রমাগত শীর্নতা অঙ্গাদির ক্রমাগত কম্প। রোগী যদি মদ্যপায়ী হয় তার জন্য
আরো উপযোগী।হাত পায়ের বেদনা, আক্রান্ত পাশে শুইতে পারে না। আক্রান্ত অঙ্গ
চালনায় আরাম।অত্যধিক দুর্বলতা ও অবসতা। ইহা সিসক বিষের প্রতিষেধক। এই রোগ লক্ষণের
সাথে আর্সেনিকের ধাতুগত মিল থাকলে আর্সেনিক এলবম অত্যন্ত কার্যকরী ঔষধ।
১০)ব্যারাইটা কার্বঃ বৃদ্ধদিগের
পক্ষাঘাত; বালকের
ন্যায় ব্যবহার করে, কিছু মনে রাখতেপারে না। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বর্ধন হয় না, মাথার
খুলি আংশিক ভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং লালা নির্গত হয়।মস্তিষ্ক ও মেরু মজ্জা দুর্বল। হাত
পায়ের কম্প।মুখে পক্ষাঘাত রোগীর জন্য ব্যারাইটা কার্ব উপযোগী।
১১) বেলেডোনাঃএপোপ্লেক্সি,মস্তিষ্কের
রক্তাধিক্য। দেহের এক পাশে কম্প। মুখের পক্ষাঘাত। লোকোমোটর এটাক্সিয়া রোগীর জন্য
বেলেডোনা উপযোগী।
১২)ক্যালকেরিয়া
কার্বঃবার বার পানিতে ভেজা; অতিরিক্ত
স্ত্রীসহবাস ইত্যাদি কারনে পক্ষাঘাতের ন্যায় দুর্বল। শিশুদের পক্ষাঘাতসহ
ক্যালকেরিয়ার ধাতুর রোগীর পক্ষাঘাতে জন্য উপযোগী।
১৩)ক্যানাবিস ইন্ডিকাঃপক্ষাঘাতে
আক্রান্ত অঙ্গ ঝিন ঝিন ভাব; দুই পা ও ডান হাতের কম্প। মানসিক বিভ্রম;খা ওয়ার
পরেই বলে সে অনেক সময় হলো আহার করে নাই। স্হান ও সময় নিয়ে ভুল ধারনা। পিঠে বেদনা, বসিয়া
থাকিলে বাড়ে এই লক্ষণ সমষ্টিতে ক্যানাবিস ইন্ডিকা উযোগী।
১৪) কষ্টিকামঃশুষ্ক
ও শীতল বায়ুতে একক স্নায়ুর পক্ষাঘাত।চোখের পাতা, জিহ্বা, ঠোটের
পক্ষাঘাত; খাইতে
ও কথা বলিতে অক্ষম।আক্রান্ত অঙ্গে বেদনা। স্পর্শঅনুভুতি ক্ষমতা ঠিক থাকে। রোগীর পক্ষাঘাত আস্তে
আস্তে বাড়ে; স্মৃতি শক্তি কমিয়া যায়। একোনাইট নেপিলাস
প্রয়োগের পরে কষ্টিকামের প্রয়োজন হয়।
১৫) চায়নাঃযে
রোগীর অত্যধিক রক্ত ও শুক্রক্ষয়ের কারণে পক্ষাঘাত হয় তার জন্য চায়না উপযোগী।
১৬) কোকুলাস ইন্ডিকাঃমুখ
কন্ঠ জিহ্বায় পক্ষাঘাত; প্যারাপ্লেক্সিজিয়া, উরুদন্ডে
অবসাদ ও বেদনা বোধ এ জন্য চলিতে পারে না। দুই পায়ের অবসতা, দুই
হাতের অবসতা,মাথার পিছনে পেশীসমুহের পক্ষাঘাতেরমত দুর্বল ও
বেদনা। অতিরিক্ত স্রী সহবাসের কারনে পক্ষাঘাত। মাথাঘোরা, দুর্বলতা, মুর্ছার
ভাব থাকিলে কোকুলাস ইন্ডিকা উপযোগী।
১৭)কোনিয়াম
মেকুলেটামঃপক্ষাঘা্ত নিচ থেকে শুরু হয়ে উপরের দিকে
পরিচালিত হলে সুষুমা শীর্ষ বা মেডেলা আক্রান্ত হলে কোনিয়াম উপযোগী।বৃদ্ধ ও
বৃদ্ধাগনের পক্ষাঘাতে উপযোগী। মেরুদন্ডে পক্ষাঘাত অথবা ডিপথেরিয়ার পরে পক্ষাঘাত
হলে মাথায় অসারতা অনুভব ও মাথা ঘুরানোর ইতিহাস যে রোগীর মাঝে পাওয়া যাবে সেই রোগীর
জন্য কেনিয়াম মেকুলেটাম উপযোগী।
১৮) কুপ্রম মেটঃনিম্ন
অঙ্গে পক্ষাঘাত শুরু হয়ে উপরের দিকে ধাবিত হয়। খিচুনির পরে পক্ষাঘাত বুকে
রক্তাধিক্যতা, প্রবল হৃৎস্পন্দন, নাড়ী
ধীর, ক্ষুদ্র
ও ক্ষীণ, চক্ষু
মুদ্রিত থাকে।তাকাইলে চক্ষুগোলক ঘুরিতে থাকে। রোগীর অনুভুতি ঠিক থাকে। সেই রোগীর
জন্য কুপ্রম মেট উপযোগী।
১৯)ডালকামারাঃঠান্ডা
ও স্যাতস্যাতে আবহাওয়ায়, আবহাওয়া পরিবর্তনের পরিবেশেবসবাসের
কারণে মেরুমজ্জা বা স্পাইনাল কর্ড এ রক্তাধিক্যের কারণে জিহ্বার আরষ্টতা বোধ ও
পক্ষাঘাত কথা বলিতে পারে না। মুত্রস্হলীর পক্ষাঘাত, দুর্গ্ধ ও অত্যাধিক
স্লেষ্মাম মুত্র।হাতে
ও পক্ষাঘাত অঙ্গে শীতল অনুভব হলে সেই রোগীর জন্য ডল্কামারা উপযোগী। ডাল্কামারার
পরে রাসটক্স প্রয়োজনীয় ঔষধ।
২০)জেলসিমিয়ামঃযে পক্ষাঘাত রোগীর অনুভতি থাকে ও অনুভুতির প্রবলতা বৃদ্ধি পায় সেউ রোগীর
জন্য জেলসিমিয়াম উপযোগী।শিশুদিগের পক্ষাঘাত, সমগ্র পেশী গুলির পক্ষাঘাত; হাত
ও পায়ের অবশতা ও ভারী বোধ।ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার করা যায় না।। চোখের পাতা উঠানো
যায় না।কথা বলায় জড়তা আসে।কোন খাদ্য গিলিতে কষ্ট হয়।পায়ের পক্ষাঘাতের কারনে হাটতে
টালমাতালঅবস্হা
হয়।হাত নড়াচড়া করতে নড়তে
থাকে।লোকোমোটর এটাক্সির তীব্রতার সাথে বেদনা থাকে। ডিপথেরিয়ার পরে পক্ষাঘাত হলে
জেলসিমিয়াম উপযোগী ঔষধ।
২১)হিপার সাল্ফঃ
পারদ বিষ জনিত কারনে পক্ষাঘাত হলে সেই রোগীর জন্য হিপার সাল্ফউপযোগী
ঔষধ।
২২)হায়োসিয়ামাসঃ
প্লাজম হবার পর প্যারালাইসিস এজিট্যান্স।বাহু ও হাতের কম্প।হাত ও পা শীতল।হাতের
আঙ্গল গুলি ছোট মনে হয়। অসারে মলমুত্র ত্যাগ করে।এই লক্ষণ সমষ্টি যে রোগীতে
বিদ্যমান তার জন্য হায়োসিয়ামাস উপয়োগী।
২৪)ল্যাথাইরাসঃ
নিম্নাঙ্গের গতি শক্তির পক্ষাঘাত; স্পর্শ
অনুভুতি ঠিক থাকে অথবা বৃদ্ধি পায়।হাটা চলায় টলটলায়মান গতি। এই পক্ষাঘাত রোগীর জন্য
ল্যাথাইরাস উপযোগী।
২৬)ম্যাগনেসিয়া ফসঃপ্যারালাইসিস এজিট্যান্স,হাত পা এমনকি মাথাও কম্প হতে থাকলে ম্যাগনেসিয়া ফস উপযোগী।
২৭)ম্যাঙ্গানামঃ
নিম্ন অঙ্গ হতে পক্ষাঘাত শুরু হয়; দেহ টলমল
করে হাটিতে চেষ্টা করিলে দৌড়াইয়া অগ্রসর হয়। হাড়ে বেদনা বোধ করে এই লক্ষণ সমষ্টি
যে রোগীর মাঝে পাওয়া যাবে তার জন্য ম্যাঙ্গানাম উপযোগী।
২৮)মার্ক সলঃযে রোগীর পক্ষাঘাত হাত হতে শুরু হয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হয়
সেই রোগীর জন্য মার্ক সল প্রয়োজন। রোগীর পাদ্বয় আরষ্টতা দেখা দেয় রোগী নিজে পা
নড়াতে না পারলেও অন্যে নড়াইতে পারে। স্পাইনাল মেনিনজাইটিসের পরে পক্ষাঘাত হলে
মার্ক সল উপযোগী ঔষধ। যে রোগীর উপরোক্ত লক্ষণ সহ মানসিক ও শারিরীক অবসন্নতা
বিদ্যমান তার জন্য মার্কসল উপযোগী ঔষধ।
২৯)নেট্রাম মিউরঃম্যালেরিয়া জ্বর,ডিপথেরিয়া,অতিরিক্ত
স্ত্রী সম্ভোগের কারনে পক্ষাঘাত; অত্যধিক
মানসিক অবসাদ, আবেগ, উত্তেজনা বশতঃ পক্ষাঘাত, নিম্নাঙ্গের পক্ষাঘাত।রোগীর মেরুদন্ডে স্পর্শ সহ্যহীন বেদনা। রোগী যদি শক্ত
বিছানায় আরাম বোধ করে তবে ন্যাট্রাম মিউর উপযোগী ঔষধ।
৩০)নাক্স ভমিকাঃএপোপ্লেক্সিজিয়া,ডিপথেরিয়া,অতিরিক্ত
মদ্যপান,স্ত্রীসঙ্গম অথবা আর্সেনিক বিষজনিত নিম্নাঙ্গের পক্ষাঘাত।
যে রোগী অলস তার জন্য নাক্স ভুমিকা উপযোগী।পক্ষাঘাত গ্রস্হ অঙ্গ শীতল অসাড় ও
শীর্ণ।অসম্পুর্ন পক্ষাঘাত গতি শক্তি সমপুর্ণ শেষ হয় না।কিন্তু আক্রান্ত অঙ্গ
নড়াইতে গেলে কম্প শুরু হয়।হাটার সময় পা টানিয়া নিতে হয়।পা উঠাইতে পারে
না।মদ্যপায়ীদের হাতের কম্পসহ পক্ষাঘাত রোগীর জন্য নাক্স ভুমিকাউপযোগী ঔষধ।
৩১)ওপিয়ামঃএপোপ্লেক্সির পর পক্ষাঘাতসহ স্পর্শ অনুভুতি লোপ। বৃদ্ধ ওমদ্যপায়ীদেরপক্ষাঘাত;যে রোগী নাক
ডাকে ও চক্ষু অর্ধেক খোলা রাখে সেই রোগীর জন্য ওপিয়াম উপযোগী।
৩২)এসিড অক্জালিকঃমেরুমজ্জার ও মেরুদন্ডের নিচের দিকে তীব্র বেদনা, নিচের দিকে ধাবিত হয়। রোগীর শ্বাসকষ্টসহ আরষ্টতা বিদ্যমান
থাকলে উপযোগী।
৩৩)ফসফরাসঃমস্তিষ্ক ক্ষয়,স্পাইনাল হাইপারট্রফিক প্যারালাইসিস। অতিরিক্ত স্ত্রী সঙ্গম, টাইফয়েড জ্বরবশতঃ সন্তান প্রসবের পরে পক্ষাঘাত। প্রায়ই
মেরুদন্ডে অসহ্য বেদনা। আক্রান্ত পেশীসমুহের সংকোচন।আক্রান্ত অঙ্গের অত্যধিক
উত্তাপ বোধ কিন্তু স্পর্শ অনুভুতি লোপ পায়।
৩৪)ফাইজোষ্টিগমাঃ প্যারালাইসিস এজিট্যান্স।বুদ্ধিবৃত্তি অটুট থাকে।খাল ধরার
ন্যায় বেদনা থাকে। ঘুমের মাঝে হাত পা কাপিয়া উঠে।যে পক্ষাঘাত রোগীর মাথার পিছন দিক
হতে মেরুদন্ড বাহিয়া পা পর্যন্ত ছড়াইয়া যায়,রোগী অবসতা ও দুর্বলা বোধ করলে ফাইজোষ্টিগমা উপযোগী ঔষধ।
৩৫)প্লামবাম মেটঃপ্রগ্রেসিভ মাসকিউলার এট্রফি। আক্রান্ত স্হানে বেদনা এবং
তৎসহ পাকাশয়ের বেদনা পর্যায়ক্রমে আসে। আক্রান্ত হওয়ার আগে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কম্প
শুরু হয়। ডান অঙ্গের হেমিপ্রেক্সিজিয়া। জিহ্বা,স্বরযন্ত্র,ও হাতের কব্জির পক্ষাঘাত। আক্রান্ত অঙ্গ শীর্ণ হয়। হাত ও পা
শীতল বোধ হয়। ঘর্ম কখনও হয়না ও দুর্দমনীয় কোষ্টবদ্ধতা যে রোগীর মাঝে পাওয়া যাবে
তার জন্য প্লাম্বাম মেট উপযোগী।
৩৬)রাসটক্সঃ অতিরিক্ত পরিশ্রম,জ্বলে ভেজা, স্যাতসেতে স্হানে শয়ন অথবা টাইফয়েড জ্বর জনিত কারনে
পক্ষাঘাত হলে রাসটক্স উপযোগী। শিশুদিগের স্পাইনাল প্যারালাইসিস, হাত পা ও কোমরে অত্যন্ত বেদনা। কঠিনবিছানায় শয়নে উপশম। আদ্র ওশীতলতার জন্য মুখমন্ডলে পক্ষাঘাত।
কোন কিছু খাইতে অক্ষমতা। এই ঔষধের পরে ক্যালকেরিয়া কার্ব, কষ্টিকাম,সালফার
উপযোগী।
৩৭)রুটাঃঠান্ডা লাগিয়া মুখে পক্ষাঘাত বা বেলস প্যারালাইসিস। হাতের
আঙ্গুল তথা বৃদ্ধাঙ্গুলির পক্ষাঘাত।রোগী চলিতে গেলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বেদনা হলে সেই
রোগীর জন্য রুটা উপযোগী।
৩৮)সিকেলি করঃকোন রোগীর কম্পও
এপোপ্লেক্সি পরে পক্ষাঘাত হলে এবং আক্রান্ত স্হান দ্রুত শীর্ণ হলে সিকেলি কর
প্রয়োজ ন।মেরুদন্ডে বিশেষ করে সেক্রাম প্রদেশে তীব্র বেদনা। সম্পুর্ণ পক্ষাঘাতসহ
অসারে মলমুত্রত্যাগ করলে সিকেলি কর উপযুক্ত ঔষধ।
৩৯)সাইলেসিয়াঃকম্পের পর পক্ষাঘাত; খাদ্য গিলিতে অক্ষমতা। বাম হাতের পক্ষাঘাতসহ শীর্ণতা। আক্রান্ত
হাতের আঙ্গল গুলোর অসারতা। দুই পায়ের পক্ষাঘাতসহ মাথার ভার বোধ। ঘার্ম বন্ধের পরে
পক্ষাঘাত;স্নায়ুসমুহের পুষ্টির অভাবে পক্ষাঘাত। শিশু হাটিতে বিলম্ব
হয়, মেরুদন্ডে টিউমার, ঠান্ডা সহ্য হয় না; অত্যধিক কোষ্ঠবদ্ধতা সেই শিশুর পক্ষাঘাত চিকিৎসায়
সাইলেসিয়া উপযোগী ঔষধ।
৪০)ষ্ট্যানাম মেটঃহস্তমৈথুন বা মানসিক আবেগ বশতঃপক্ষাঘাত; বাম পাশে পক্ষাঘাত; ক্রিমি বা আক্ষেপ জনিত পক্ষাঘাত; পক্ষাঘাতগ্রন্হ বাহু ও সেই পাশের বুকে ভার বোধ। আক্রান্ত
অঙ্গ সর্বদা ঘর্মাক্ত ও নিশা ঘর্ম হলে সেই রোগীর জন্য স্ট্যানাম মেট উপযোগী।
৪১)ষ্ট্যামোনিয়ামঃসার্ভাইক্যাল ও ডর্সাল ভার্টিব্রার মধ্যে সর্বদা বেদনা ও
ভারবোধ। হাত
দ্বারা কোন কিছু উঠাইতে কষ্ট। কথনও কম্প কখনও পক্ষাঘাত। এক অঙ্গের কম্প অপর অঙ্গে
পক্ষাঘাত।কম্পের পরে অথবা মানসিক আবেগের পরে ,অত্যধিক স্ত্রীসঙ্গম বা সিসক বিষজনিত পক্ষাঘাত হলে
ষ্ট্যানাম মেট উপযোগী ঔষধ।
৪২)সালফারঃ কোন চর্ম রোগ বসিয়া, ডিপথেরিয়া, টাইফয়েড জ্বর, ঠান্ডা লাগার কারণে পক্ষাঘাত হলে সালফার উপযোগী।হাত পায়ের
পক্ষাঘাত সহ মুত্র অবোরোধও নাভি
পর্যন্ত অসার। মেরুদন্ডে চাপ দিলে বেদনা বোধ। মেরুদন্ডের দুর্বলতার জন্য রোগী কুজো
হয়ে চলে।বেলা এগারোটার দিকে পাকস্হলীর শুন্যতা বোধ যে রোগীর মাঝে বিদ্যমান তার
জন্য সালফার উপযোগী ঔষধ।
৪৩)ভেরেট্রম এল্বমঃকলেরার পরে পক্ষাঘাতহাত ও পায়ের বেদনাসহ পক্ষাঘাত। হাতকাঁপার কারণে কোন কিছুই ধরিতে পারে না।হাত ও পা বরফের মত
শীতল ও নিলাভ। এই লক্ষণ সমষ্টি যে রোগীর মাঝে পাওয়া যাবে তার জন্য ভেরেট্রাম এল্বম
উপযোগী।
৪৪)জিঙ্কাম মেটঃ মস্তিষ্কের কোমলতার কারণে অথবা পায়ের ঘাম বন্ধ হয়ে
পক্ষাঘাত। রোগীর মাথা ঘোরা ও আক্রান্ত অঙ্গের কম্প, অসারতা, ঝিনঝিনানি।
গায়ে ঘর্ষণ করিলে উপশম, মদ্যপানে
বৃদ্ধি, রতিশক্তির হ্রাস; মেরু মন্ডলে জ্বালা সহ রোগীর গায়ে পিপিলিকা হাটার অনুভুতি
হলে সেই রোগীর জন্য জিঙ্কাম মেট উপযোগী।